নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সারা দেশে যখন সংঙ্কটে ঠিক সেই মুহূর্তে দর্শনায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ৩ সাংবাদিককে মারধর করেছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার (৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দর্শনায় সরকারি নির্দেশনা সাধারণ মানুষ কতটুকু মানছে, সে বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এ সময় দর্শনা থানা-পুলিশের সদস্যরা উল্টো এই সাংবাদিকদের ওপর অযথা ঘোরাফেরার অভিযোগ তুলে হামলা চালায় এবং হকিস্টিত ও রাইফেলের বাট দিয়ে মেরে ৩ সাংবাদিককে জখম করে। এ সময় ওই সাংবাদিকেরা পরিচয় দেওয়াসহ আইডি কার্ড প্রদর্শন করলেও শোনেনি পুলিশ। বরং সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিনই বিকেল ৫টায় দর্শনা প্রেসক্লাবে এক জরুরি সভা ডাকা হয়। সভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ৩ সাংবাদিকের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার তিব্র প্রতিবাদ জানিয়ে নিন্দা জ্ঞাপন করেন। পরে দর্শনা পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান ও দর্শনা থানার ওসি (তদন্ত) শেখ মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে গতকাল বৃহস্পতিবার এক সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দেন। অথচ ঘটনার দুদিন পার হয়ে গেলেও এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আজ শুক্রবার (১০ এপ্রিল) থেকে ৩ সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে দর্শনা থানা-পুলিশের সকল প্রকার সংবাদ বর্জন করেছে দর্শনায় কর্মরত সকল প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা বলে দর্শনা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। একই সাথে ঘটনার দিন দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকার দর্শনা অফিস প্রধান ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হারুন রাজু বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। কারণ লকডাউনে আমরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্বপালন করছিলাম। তাই দর্শনা প্রেসক্লাবের সকল আন্দোলনের সাথে আছি এবং থাকব।’
দর্শনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আওয়াল হোসেন বলেন, ‘দর্শনায় কর্মরত সকল প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইয়েরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত কলম বিরতি করবে। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।’
দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান ধীরু বলেন, ‘সাংবাদিকেরা পুলিশের অধিনস্ত কোনো কর্মচারি নয়। তাই যখন ইচ্ছা তখন তারা কারণে-অকারণে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাবে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত দর্শনা থানা-পুলিশের সকল প্রকার সংবাদ বর্জন করলাম। আমাদের বলা হয়েছিল ৯ এপ্রিল অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার সবাই বসে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হবে। অথচ দুদিন পার হলেও কোনো পদক্ষেপ নেই। তাদের এই চুপচাপ থাকা প্রমাণ করে, তারা দোষী।