নিউজ ডেস্ক:
তিস্তা নদীতে উজান থেকে ঢল নেমেছে। শুকিয়ে থাকা তিস্তায় হু-হু করে বাড়ছে পানি। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নব যৌবনে ফিরে আসছে তিস্তা। ভরা বোরো মৌসুমে হঠাৎ নদীতে পানি আসায় তিস্তার চর ও দু’পাড়ের শত শত কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝলক। তিস্তাপাড়ের বালু ভরা জমিতে পানি দিয়ে ফিরেতে না ফিরতে হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধি। এমন দৃশ্য দেখে রমজান আলীসহ অনেক কৃষকের চোখে-মুখে হাসি দেখা গেছে।
রজমান আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে হঠাৎ করে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি । আমরা আশাবাদি প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরেই দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা পানি চুক্তি বাস্তবায়ন হবে।
গত রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে পানি বাড়তে থাকে। রাতেই পানির পরিমান রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ০৫ সেন্টিমিট। পরের দিন সোমবার দুপুরে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানির বেড়ে দাঁড়ায় ৫২.০৫ সেন্টিমিটার। গত দুই দিনে পানি বেড়ে দাড়ায় ৪৫ সেন্টিমিটার। মোট পানির পরিমান দাড়ায় ২ হাজার ৭’শ কিউসেক।
কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, শুস্ক মৌসুমে এ ধরনের পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকলে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া যেত। পানি না থাকায় এ বছর ব্যারেজের রংপুর ও দিনাজপুর কমান্ড এরিয়া বাদ দিয়ে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। যাতে শত শত কৃষক পানি থেকে বঞ্চিত হয়ে চাষাবাদ থেকে সরে দাড়িয়েছে।
সূত্র মতে, পানি স্বল্পতার কারণে চলতি মৌমুমে ৮ হাজার হেক্টর জমির বোরো ক্ষেতে সেচ দেয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে বন্ধ থাকা তিস্তা ব্যারাজের কয়েকটি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে তিস্তার ধুধু বালু চরে পানি উঠেছে। তিস্তার চরে রোপন করা ভুট্টা ক্ষেত পানিতে ভরে উঠায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে সবজিসহ মিষ্টি কুমড়া, পিয়াজ ও রসুনের ক্ষেত পানিতে ডুবে যাওয়ায় হতাশাও লক্ষ্য করা গেছে কৃষক পরিবারগুলোতে।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ আগেও ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল মাত্র ৬০০ থেকে ৮০০ কিউসেক। হঠাৎ গত রবিবার সন্ধা থেকে পানি বেড়ে যায়। সোমবার দুপুরে পানি বেড়ে দাড়ায় ২৭০০ কিউসেক। পানি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি জানান, ব্যারেজের উজানে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভারত গজলডোবা ব্যারেজের গেট খুলে দিয়েছে।