নিউজ ডেস্ক:
পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় তিস্তা নদীর অন্তরবর্তীকালীন পানি বণ্টন চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ফেনী নদীর অন্তরবর্তীকালীন পানি বণ্টন চুক্তির ফ্রেমওয়ার্কও চূড়ান্ত হয়েছে। শিগগিরই সমতা, ন্যায়ানুগতা এবং পারস্পরিক ক্ষতি না করার নীতির ভিত্তিতে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন করা হবে। ভারতের সঙ্গে আলোচনা পূর্বক চুক্তি স্বাক্ষরের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে গতকাল মঙ্গলবার টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আবুল কালামের (নাটোর-১ ) তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, মনু, মুহুরী খোয়াই গোমতী ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বণ্টন বিষয়েও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
পানিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরকালে শুকনো মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি স্বল্পতার কারণে দুই দেশের জনদুর্ভোগের কথা অনুধাবন করে জরুরি ভিত্তিতে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া প্রয়োজন মর্মে যৌথ ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভাঙন রোধে ৪০০ কিলোমিটার নদী খনন করা হয়েছে :
সুকুমার রঞ্জন ঘোষের (মুন্সিগঞ্জ -১) প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, নদীর ভাঙন রোধ, নদীর প্রবাহ বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এ নদী খনন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত দেশে মোট ৩৯৭ দশমিক ৭২ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং ও খনন করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৯৩ দশমিক ২০ কিলোমিটার পূর্ণ খননের কাজ চলমান রয়েছে।
ভাঙন রোধে ৮২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ের ডিপিপি অনুমোদিত :
সেলিনা বেগমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, দেশের প্রধান তিনটি নদী যমুনা, গঙ্গা ও পদ্মার ভাঙন রোধে সরকার ‘ফ্লাড অ্যান্ড রিভারব্যাঙ্ক ইরোশান রিক্স ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে শুরু হয়েছে এবং ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে শেষ হবে। প্রথম পর্যায়ে ৮২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ের ডিপিপি অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় মোট ১৭ দশমিক ৮০ কি. মি. নদী তীর সংস্কার, ২৩ কি. মি. বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মান , ৪টি রেগুলেটর নির্মান, ভূমি পূণউদ্ধার পাইলটিং কাজ ও ৬০ টি কমিউনিটি বেইজ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইউনিট স্থাপিত হবে।
৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা উপকুলীয় অঞ্চলের ভাঙন রোধ :
এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) অপর এক প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদমন্ত্রী জানান, জলবায়ু ক্রমবর্ধমান উষ্ণতার কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জন্য দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের সমগ্র পোল্ডারগুলো সংস্কার উন্নয়ন ও প্রতিস্থাপনে ‘কোস্টাল এমবার্কমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট-ফেজ ১, শীর্ষক প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এছাড়া উপকূলীয় পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুরে জেলার ৭০৩ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ইমারজেন্সি ২০০৭ সাইক্লোন রিকোভারী অ্যান্ড রেস্টোরেশন’ প্রজেক্টের কাজ চলমান রয়েছে।