ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দুর্নীতি
নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখের দুর্নীতি তদন্তে হাই ভোল্টেজ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গত ২৪ অক্টোবর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের প্রশাসন অধিশাখা-১-এর উপসচিব মোসা. সুরাইয়া বেগম এক অফিস আদেশে উচ্চপর্যায়ের এই কমিটিকে কাজ শুরু করার নির্দেশনা দেন।
মন্ত্রণালয়ের ১৫.০০.০০০০.০১৩.২৭.০০১.১০.১০৯০/১(৪) নম্বর স্মারকে চিঠিতে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আনিত অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তপূর্বক ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আগামী শুক্রবারের (৮ নভেম্বর) মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-২-এর অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ইয়াকুব আলী পাটওয়ারী। সদস্যসচিব করা হয়েছে সিনিয়র সহকারী সচিব তারিক হাসান। এ ছাড়া তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মো. মঈনুল ইসলাম। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রানী সাহা গত ২ অক্টোবর ‘ভুয়া কাজ ও বিল ভাউচারে লোপাট ১০ কোটি টাকার বিষয়ে তদন্ত প্রসঙ্গে’ শিরোনামে তাঁর দপ্তরের ২৫.৩৬.০০০০.২১৩.২৭৫৫৯.১৯.১০৮৭ নম্বর স্মারকে একটি চিঠি ইস্যু করেন। তদন্তপূর্বক তিন কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত প্রেরণ করার জন্য তদন্ত দলকে নির্দেশ দেন। গত ৭ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক নাজমুস সায়াদাত ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের ১০ কোটি টাকা লোপাটের বিষয়ে খোঁজখবর নেন। ঝিনাইদহে অবস্থানকালে তিনি গণপূর্ত অফিসের ঠিকাদারী কাজের নথি দেখেন ও নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ কাজ না করেই কোটি কোটি টাকার বিল উত্তোলন করেন বলে পত্রিকা ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সংবাদ প্রচার হয়। খবর ফাঁস হয়ে পড়লে জুনের আগে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে বিল তুলে নেওয়া প্রকল্পগুলো তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করেন। ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া ডরমেটরি ভবন, নন হেজেটেড ডরমেটরি ভবন, জেলা জজের বাসা, সাবডিভিশন অফিস ও গণপূর্তের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর বাসাসহ বিভিন্ন অফিস মেরামত ও রঙ করেন। অথচ কাজ দেখিয়ে জুনের আগেই তিনি ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিল তুলে নেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ই-জিপি টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু বিধি ভঙ্গ করে ম্যানুয়ালি নেটিফিকেশন অব এওয়ার্ড (নোয়া) দেওয়া হয়। যা পিপির বিধি বহির্ভূত। প্রশ্ন উঠেছে ই-জিপি টেন্ডার আহ্বান করলে একজন ঠিকাদার অর্ধশত কাজ কীভাবে পায়। এভাবে তিনি দুই-তিনটি লাইসেন্সের বিপরীতে শত শত কাজ দিয়ে কোনটি কাজ না করে আবার আংশিক কাজ করে নয় কোটি টাকার বেশি টাকা লোপাট করেন। এ বিষয়ে কথা বলতে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখের মুঠোফোনে (০১৮৮২-১১৫৩৮১) গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।