জিয়াবুল হক , টেকনাফ : আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪০-৫০ হাজার গরু কোরবানির পশুর হাটে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। এই কোরবানির পশুর নিরাপত্তা নিয়ে মহা টেনশনে রাত কাটাতে হয় গ্রামঞ্চলের মানুষদের।
সুত্রে জানা যায়, উপজেরার বিভিন্ন এলাকার কিছু কিছু ব্যবসায়ীরা গরুকে নিষিদ্ধ মিয়ানমারের ডেক্সামেথাসোন ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। এসব গরুর মাংস মানুষের শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। টেকনাফের নাফনদীর মিয়ানমারের সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত শত শত গরু, মহিষ আসছে। আর গরু, মহিষ গুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। কিন্তু টেকনাফে বিভিন্ন জায়গাতে দেখা যায় গরুর খামার এর মধ্যে অন্যতম টেকনাফ সদর ,সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়া , শাহপরিদ্বীপ , হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী, উলুচামরি হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লাতুরিখোলা, চাকমাপাড়া ও কানজর পাড়ার বাহারছরার ইউনিয়নে শামলাপুর, উত্তর শিলখালী ও জাহাজ পুরা এই জায়গায় প্রায় শত শত পরিবারের আয়ের অন্যতম বড় উৎস হল ঈদ মৌসুমের জন্য বিভিন্ন গবাদি পশু পালন করা। এদের প্রতিটি বাড়ির লোকজন এখন মহা ব্যস্ত গরু, মহিষ দেখাশুনা করা নিয়ে। গরু, মহিষের গোমানোর ঘর, খাবার ঘরে মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখে। সাবান দিয়ে গরুকে গোসল করায়। এই সব এলাকায় সবুজ তরতাজা ঘাস ও খড়ের ওপর নির্ভর করে পশু লালন-পালন হয়ে থাকেন।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গরু আবুল হাসেম ব্যবসায়ী বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কমদামে দুর্বল গরু কিনে কিছু দিন লালন-পালন করার পর গরুকে মিয়ানমারের ডেক্সামেথাসোন ওষুদ খাওয়ানো হয়। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বেশ গরু মোটাতাজাহয়। এর ফলে গরু দেখতে আকর্ষনীয় হয়ে উঠায় কোরবানির হাটে ভাল দাম পাওয়া যায়।
বিশেষ করে টেকনাফ উপজেলায় ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা কম করে হলেও ৪০-৫০ হাজার গরু, মহিষ কোরবানির হাটে নেয়ার জন্য অপেক্ষায় আছে। গরুর খামারিরা অভিযোগ করেন, গরুর রোগ-বালাই হলে পশু চিকিৎসকরা বাড়তি টাকা ছাড়া এই এলাকা গুলোতে যাননা। পশু চিকিৎসকরা বলেন যে সব এলাকায় গরু, মহিষ লালন-পালন করা হয় সে সব এলাকায় যেতে রিক্সা ভাড়া বেশি হওয়ায় টাকা বেশি নিতে হয়।
শাহপরিদ্বীপে বাসিন্দাদের অভিযোগ, মিয়ানমারের গরুর প্রভাবে গত বছর বিপুল লোকসানের মুখে পড়েছে তারা। ফলে টেকনাফে গরু গুলো নিয়ে যেতে হলে একদিন থাকতে হয় তার পরও হারিয়াখালি রাস্তা মাতায় ঈদ আসলে ডাকাতি বেড়ে যায়। এছাড়া ডাকাত আতংকে রাত জেগে পাহারা দিলেও পুলিশের সহায়তা পান না। এমনিতেই নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রাম করে এইঞ্চলের মানুষ বেঁচে থাকার নিরন্তর চেষ্টা চালান। এরপরও যদি ডাকাতের হামলায় তাদের সর্বস্ব লোট-পাট হয়ে যায় এই চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটে এইঞ্চলের বাসিন্দাদের। তাদের সারা বছরের আয়ের স্বপ্ন কোরবানির পশু যাতে ডাকাতরা লুট করে নিয়ে যেতে না পারে তার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এমনটাই প্রত্যাশা শাহপরিদ্বীপবাসী সহ টেকনাফ উপজেলার মানুষ।