স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ ৬ উপজেলার বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা গ্রেফতার ভয়ে বাড়ি থাকতে ও ফিরতে পারছে না। অনেকে দীর্ঘদিন বাড়ি ছাড়া রয়েছে। তারা গ্রেফতার আতঙ্ক ও একাধিক মামলা থাকায় তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বিএনপি ও ২০ দলীয় ঐক্যজোটের নেতাকর্মীদের নামে ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলার থানায় রয়েছে ৩৪৭টি মামলা। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪১ হাজার ৭৪২ জন নেত ও কমীদের নামে। এসব নেতাকর্মীদের অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও অনেকের মাঠের চাষ বন্ধ হয়ে গেছে। কারো কারো মাঠের ধান পেকে গেলেও কাটতে পারছেন না। অজানা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। গত ১০ বছরে বিএনপি ও তার শরীকরা কোন মিছিল মিটিং ও সমাবেশ করতে না পারলেও একের পর এক নাশকতার মামলা করা হয়েছে। নাশকতার পাশাপাশি অস্ত্র, মাদক ও বোমা নিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের চালান দেওয়া হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব সরকারের কাছে যে মামলার তালিকা দিয়েছে তাতে ৩৪৭টি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির দেওয়া তথ্যমতে গত দুই সপ্তাহ আগেও ঝিনাইদহ, হরিণাকুন্ডু, শৈলকুপা ও কালীগঞ্জে নুতন করে ৮ মামলায় ৪০০’শ জন আসামি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট মামলার সংখ্যা ৩৪৭টি। এসব মামলায় আসামি রয়েছে ৪১ হাজার ৩৪২ জন।ঝিনাইদহ সদর থানায় ১১২টি মামলায় আসামি হয়েছেন ১২ হাজার ৫১৫ জন, হরিণাকুন্ডুতে ৮১ মামলায় আসামি ৯ হাজার ৫’শ, শৈলকপুায় ৫১টি মামলায় আসামি ৫ হাজার ৬’শ জন, কালীগঞ্জে ৪৯টি মামলায় ৪ হাজার ৫’শ জন, কোটচাঁদপুরে ৩২টি মামলায় ৪ হাজার ১১৫ জন ও মহেশপুর উপজেলায় ৪১টি মামলায় ৫ হাজার ১১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ মামলা হয়েছে ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে। তার নামে ২৫টি মামলা করা হয়েছে বলে বিএনপির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন নিশ্চিত করেন। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মসিউর রহমান মুঠোফোনে জানান, গত ২ বছরে ঝিনাইদহের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের উপর যে ভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করা হয়েছে তা এক কথায় ছিল ভয়াবহ। তিনি বলেন, এখনো নেতাকর্মীরা নিজ এলাকায় ফিরতে পারেনি। তারা অজানা আতঙ্কে রয়েছেন। মামলার আসামিরা বলছে সামনে নির্বাচন করার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনির লোকজন তাদের গ্রেফতার করলে ভোটের পাঠে কিভাবে তারা ভোটারদের কাছে যাবে। এসব মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে নেতা কর্মীরা সবাই এখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। কখন যেন তারা গ্রেফতার হয় এমন আতঙ্ক তাদের মধ্যে বিরাজ করছে। অবশ্য কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুস আলী বলেন, নাশকতা,দেশের বিরুদ্ধে ও নির্বাচন বিরোধি কোন কর্মকান্ড কেউ করলে সে যে দলের হোক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।