ঝিনাইদহ সংবাদাতাঃ
ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে বিভিন্ন এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের ঋণের খপ্পরে জড়িয়ে পড়ে হাজার হাজার পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। দেখার কি কউ নেই? এ প্রশ্ন এখন জেলার অসহায় হাজার হাজার পরিবারের। জেলার সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সে মোতাবেক কালীগঞ্জ উপজেলায় এনজিও গুলোর হাতে সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ড, বয়স্ক শিক্ষা, শিশু শিক্ষা, বনায়ন, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন, নার্সারি, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহসহ নানা কর্মসূচি থাকলেও মূলত সুদের ব্যবসাই তাদের প্রধান কাজ। প্রথম পর্যায়ে এনজিওর কর্মীরা সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে দরিদ্র পরিবারের নারীদের সমিতির সদস্য বানিয়ে প্রথমে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়। তারা সদস্যদের হাঁস-মুরগি পালন অথবা গরু-ছাগল পালনের জন্য ঋণ ফরমে স্বাক্ষর করালেও আদৌ তারা তা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা তদারকি করে দেখেন না। দীর্ঘদিন এভাবে অনেক নারী পুরুষ ঋণের খপ্পরে পড়ে সব কিছু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই।
অপরদিকে এনজিওর নিয়ম অনুযায়ী ঋণের টাকা খাটিয়ে তার আয় থেকে কিস্তির টাকা আদায়ের কথা থাকলেও ঋণ প্রদানের পরের সপ্তাহ থেকে কিস্তির টাকা আদায় করে থাকে। এ ঋণের সুদের হার ব্যাংকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। গ্রামের হতদরিদ্র নারীরা বলেন, প্রতি সপ্তাহে কিস্তির টাকা শোধ করতে ব্যর্থ হলে এনজিও কর্মীদের অশালীন ভাষায় গালি গালাজসহ সংসারের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে হাঁস-মুরগি এমন কী ঘরের টিন পর্যন্ত খুলে নেয়ার জন্য টানাটানি শুরু করে দেয়। এ অবস্থায় এক সংস্থার ঋণের টাকা পরিশোধ করতে একাধিক এনজিওর ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে সহজ সরল মানুষ। অপর দিকে কিছু অসাধু ব্যক্তি শতকরা ১৫/২০ টাকা হারে প্রকাশ্যে সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মহাজনরা ঋণের টাকা আদায় করতে না পারলে ভিটা বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে সুদের টাকা গ্রহনের পর সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তির টাকা দেবার পর ও সুদ খোরদের টাকা পরিশোষ হয় না। তারা সব সময় চক্র বৃদ্ধি হারে সুদ দেখিয়ে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেয়। এত অত্যাচার হবার পর ও গ্রাম এলাকার মানুষ অর্থের অভাবে ঋণের টাকা নিতে থাকে। অনেকে বাড়ি, দোকান, ফসলি জমি পর্যন্ত লিখে দিয়েছে। হয়ে পড়েছে সর্বশান্ত।