স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের বিভিন্ন ইউনিয়নে সরকারি ঘর দেয়ার নাম করে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে দায়ী চেয়ারম্যান ও মেম্বররা পার পেয়ে যাচ্ছেন। গত বছর শৈলকুপার ত্রিবেনী ইউনিয়নের ঋষিপাড়ার বাসিন্দারা এরকম অভিযোগ তোলেন ইউপি মেম্বার নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে। ওই গ্রামের ৩০জন হতদরিদ্র ব্যক্তির কাছ থেকে সরকারী বরাদ্দের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫ হাজার করে টাকা করে নেন স্থানীয় মেম্বর নাছির। তারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি। শৈলকুপার ইউএনও সাইফুল ইসলাম তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানালেও বছর পার হয়ে যায়। হরিণাকুন্ডুর রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ৫জন মেম্বার বৃহস্পতিবার সকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ইউনিয়ন পরিষদের নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পদ্মাকর ইউনিয়নের তিওরদাসহ বিভিন্ন গ্রামের হতদরিদ্ররা জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে দিয়েছেন। তবে অনেকে টাকা ফেরৎ পেলেও বেশির ভাগ মানুষের টাকা পকেটস্থ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঝিনাইদহ সদররের সুরাটের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও এক মেম্বারের বিরুদ্ধে ঘর করে দেয়ার নাম করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রতিকারের অপেক্ষায় আছেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই বছর আগে সুরাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়ার্দার কেবি ও ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার তাইজুল ইসলাম ভেলু ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের ঘর করে দেয়ার নাম করে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে টাকা করে নিয়েছেন। কিন্তু তারা ঘর পাননি। টাকাও ফেরৎ দিচ্ছেন না। টাকা চাইতে গেলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। সুরাট ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে খয়বার মন্ডল,মৃত কিরাদত মন্ডলের ছেলে সিদ্দিক মন্ডল, মৃত খালেকের মেয়ে আসমানি বেগম,মন্টু মন্ডলের ছেলে সজিব হোসেন, কিরাদত মন্ডলের ছেলে মধু মন্ডল, সিদ্দিক মন্ডল, মর্জেত মন্ডলের ছেলে কালাম মন্ডলসহ ১০জন লিখিত অভিযোগে সাক্ষর করেছেন। একই ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের ফজিলা খাতুন, মনোরা, ফিরোজা, সালেহা ও তোয়েব আলী গত ২০ জুলাই ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়ার্দার কেবি টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়ার্দার কেবি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা গ্রহন করিনি। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিভিন্ন দপ্তরে এ সব বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিচ্ছে। তিনি বলেন বৃহস্পতিবার আমি ঝিনাইদহ শহরে এসে বিস্তারিত বলবো। কিন্তু তিনি আর কথা বলেননি। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরুদ্দোজা শুভ’র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।