নিউজ ডেক্স :
ঝালকাঠিতে বন্দী অনাহারী বৃদ্ধ মাকে ফিরে পেতে বড় বোন সহ তিনজনকে বিবাদী করে ছোট বোনের থানায় অভিযোগ দায়ের। পুলিশের হস্থক্ষেপে ৪ দিন বন্দী অনাহারী সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধা মাকে উদ্ধার করলো মুন্নী। সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের সুগন্ধিয়া গ্রামের মৃত্যু আফতার সরদারের মেয়ে প্রায় সত্তরার্ধ স্বামীহারা দুই সন্তানের জননী আকলিমা। একই ইউনিয়নের মানপাশা গ্রামের জালাল উদ্দীনের সাথে বিয়ে হয় তার। স্বামীর মৃত্যুর পর দুই কন্যা সন্তান কামরুন নাহার ও নাজমুন নাহারকে নিয়ে থাকতেন ঢাকাতে। পরে বড় মেয়ের কথায় স্বামীর বাড়ীতে না গিয়ে বাবার বাড়ীর নিকটে বড় মেয়ের বাড়ীতে ছোট মেয়েকে নিয়ে থাকছেন।
বড় বোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরকারী ছোট বোন মুন্নীর অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, অভিযুক্ত বিবাদীরা যথাক্রমে বড় বোন কামরুন নাহার, বোনের নতুন স্বামী আলম হোসেন ও বোনের মেয়ে উর্মি আক্তার। মুন্নী তার মাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করত। বড়বোন কামরুন নাহার, একাধিক বিবাহিত। চলতি বছর জানুয়ারী মাসে আলম হোসেন নামের এক ব্যক্তির সাথে সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। নতুন স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ীতে আসার পূর্বে বড় বোন কামরুন নাহার তার মাকে প্রলোভন দেখিয়ে ছোট বোন সহ বাড়ীতে নিয়ে আসে। কিছুদিন পূর্বে আকলিমা ও তার ছোট মেয়ের সাথে বড় মেয়ে কামরুন নাহারের একাধিক বিয়ে করা ও মায়ের জমি আত্মসাৎ করার জন্য ছোটবোন মুন্নীকে অনেক দূরে বিয়ে দেয়ার কথা বললে মুন্নী সে বিয়েতে রাজি না হলে মা ও দু’বোনের মধ্যে দ্বন্দ শুরু হয়। দ্বন্দের এক পর্যায় কামরুন্নাহার তার স্বামী ও মেয়ে মিলে একত্র হয়ে বাড়ীর সামনের রাস্তায় ফেলে
মুন্নীকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয় এবং সেই সাথে বৃদ্ধ মাকে ঘরের একটি কক্ষে বন্দী করে অনাহারে রাখে। ছোট মেয়ে মুন্নী সেখান থেকে তার মামা বাড়ীতে চলে গিয়ে সেখানে আশ্রয় নেয়। পরে গত ২মে মুন্নী তার মাকে উদ্ধার করার জন্য ঝালকাঠি সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে
৩মে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে সংঙ্গীয় ফোর্স সহ এস আই অচিৎন্ত স্থানীয় ইউপি সদস্য নিয়াজের উপস্থিতিতে কারুন নাহারের বাড়ীতে গিয়ে কামরুন নাহারের জন্য প্রায় ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করে ফ্লাক্সিবল গেটের তালা ভেঙ্গে বৃদ্ধা আকলিমাকে উদ্ধার করে তার ছোটমেয়ে মুন্নীর হাতে তুলে দেয়।
এ বিষয় নাজমুন নাহার মুন্নীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করে আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নানা বাড়ীর পার্শ্বে সম্পত্তি ক্রয় করে একটি এক তলা বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং নির্মাণ করে বড় বোন কামরুন নাহার। তারপরেও এত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও কামরুন নাহার তার মায়ের সম্পত্তি একা আত্তসাৎ করার চেষ্টা শুরু করিয়া ব্যর্থ হয়ে মায়ের উপর মানসিক নির্যাতন শুরু করে। আমার বোন কামরুন নাহার বিভিন্ন সময় আমাদের অজান্তে একাধিক বিয়ে করিয়া আসিতেছে। তার রাজত্ব কায়েমের জন্য নোয়খালীর একটি ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে। যাহাতে আমি আমার মাকে ছাড়িয়া চলে গেলে তাহার পরিকল্পনা অনুযায়ী মায়ের সম্পত্তি ভোগ দখল করিতে পারে। আমি উক্ত বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আমার বোন আমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।
কামরুন নাহার আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তার মা জানান, আমার মেয়ে কামরুন নাহার অনেকদিন আগে ঢাকা এয়ারপোর্টের এক বয়স্ক লোক এসে আমার মেয়ে কামরুন নাহার এক হাজার টাকা নোটের অনেক গুলো বান্ডিল দিয়ে যায়, যা আমি এবং আমার মেয়ে জানতে পারি। এই টাকার বিষয় আমার মেয়ের কাছে আমি জানতে চাইলে সে বিভিন্ন কথা বলে আমাকে বুঝিয়ে রেখেছে এবং ওই টাকা নিয়ে এসে এখানে জায়গা ক্রয় করে বিল্ডিং নির্মাণ করেন।
ঐ এলাকার স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করে সম্পত্তি ক্রয় করে বিল্ডিং নির্মাণ করেন কামরুন নাহার। নিত্য নতুন পুরুষ মানুষ নিয়ে এসে স্বামী পরিচয় দিয়ে থাকেন, কখনও আবার মিথ্যে মামলা দিয়ে আমাদেরকে ফাশিয়ে দেয়ার ভয় দেখায় যেন আমরা তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে না পারি। আমরা এই দেশের বিচার বিভাগের কাছে অনুরোধ জানাই তারা যেন এই বিযয়টিকে খতিয়ে দেখে তার মাধ্যমে যেন আমাদের এলাকা কলঙ্কিত না হয়। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।