নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গিরিশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়েছে। স্কুল প্রাঙ্গণের নির্মিত শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ফল ঘোষণা করেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকেরা। গত ৩০ ডিসেম্বর সোমবার স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার সময় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় কেউ একজন জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠার ওই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। বীর প্রতীক সাবেক সুবেদার মেজর সাইদুর রহমানসহ সাধারণ মানুষ এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। জানা যায়, তৎকালীন বিএনপি সরকার আমলে ২০০৪ সালে তিতুদহ ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের এক দল শিক্ষিত বেকাদের উদ্যোগে ৭৫ শতক জমিতে টিনের সেড দিয়ে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় গিরিশনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এরপর স্কুলটি ২০১০ সালে অষ্টম শ্রেণি এবং ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নবম ও দশম শ্রেণিতে এমপিওভুক্ত হয়। একই বছরে স্কুলটির অবকাঠামো উন্নয়নে তিনটি শ্রেণিকক্ষবিশিষ্ট চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বর্তমানে স্কুলটি প্রায় ৬ শ শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য ১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। বিগত দিনগুলোতে বিভিন্ন টানাপড়েন থাকলেও সম্প্রতি যখন অবকাঠামো উন্নয়নসহ শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসছে, ঠিক তখনই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের উৎসবে শহীদ বেদীতে জুতা পায়ে উঠলেন ওই শিক্ষকেরা। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হায়দার মল্লিক বলেন, ‘দেশে অনেক জায়গায় অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে, সেগুলো সাংবাদিকরা দেখেন না। শহীদ বেদীতে আমার পায়ে জুতা ছিল না। কতিপয় ব্যক্তি আমার পায়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জুতা বসিয়ে দিয়েছে।’ জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠার ঘটনা স্বীকার করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ জানান, ‘শিক্ষক হিসেবে এ ঘটনায় আমি লজ্জিত। জাতির কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।’ এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠার ঘটনার যদি প্রমাণ মেলে, তবে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।