মা-বাবা ও বোনকে পিটিয়ে জখম করলো বখাটে দল!
নিউজ ডেস্ক: জীবননগরে স্কুলছাত্রীর উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মা-বাবা ও বোনকে পিটিয়ে জখম এবং বাড়িতে ভাংচুরসহ নগদ ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার হাসাদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে জীবননগর উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়নের হাসাদহ স্কুলপাড়ার মশিয়ার রহমানের মেয়ে হাসাদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী সোহানা রহমান (১৬) স্কুল থেকে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে একই গ্রামের কাঠপট্টিপাড়ার ইউনুছ আলীর ছেলে বখাটে সাব্বির আহম্মেদ সুজন (১৭) সোহানা রহমানকে উত্ত্যক্ত করে ও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। স্কুলছাত্রী সোহানা বিষয়টি বাড়িতে তার বাবাকে জানালে সোহানার বাবা মশিয়ার রহমান সুজনের কথার প্রতিবাদ করলে সুজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার দলবল নিয়ে দুপুরে ওই স্কুলছাত্রীর বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুরসহ স্কুলছাত্রীর বাবা মশিয়ার রহমান (৫৫), মা রহিমা রহমান ও বড় বোন সুমনা রহমানকে পিটিয়ে জখম করাসহ ঘরে থাকা নগদ ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বখাটে সুজন ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে।
আহত স্কুল ছাত্রীর বাবা মশিয়ার রহমান অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে আমার মেয়ে স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সুজন ও তার বন্ধুরা তাকে উত্যাক্ত করে। বিষয়টি আমাকে বললে আমি সুজনকে এ সমস্ত আজে বাজে কথা বলতে নিষেধ করি এবং বিষয়টি আমি হাসাদহ ইউপি চেয়ারম্যানসহ সুজনের পরিবারকে জানায়। ওই কথার পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে হাসাদহ কাঠপট্রিপাড়ার খলিলুর রহমানের ছেলে ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে সুজন ও তার বন্ধু পনেরসতিপাড়ার নদে জামানের ছেলে শাহারিয়ার হুসাইন ছানি (১৭), খলিলুর রহমানের ছেলে আশরাফুল (২২), ইউসুফ আলীর ছেলে নয়ন আহম্মেদসহ (২২) বেশ কয়েকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দা, হাসুয়া, লোহার শাবল ও বাঁশের লাঠিশোটা নিয়ে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে ঘরে থাকা ফ্রিজ, শোকেস, চেয়ার, টেবিলসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ ঘটনায় আমি বাধা দিলে তারা আমাকে এবং আমার স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করে ঘরের ভিতরে ব্যবসার জন্য ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় আমরা প্রাণে বাঁচতে চিৎকার করলে স্থানীয় জনগন ছুটে আসে এবং তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, স্কুলছাত্রীকে উত্যাক্ত করার বিষয়টি আমি শুনে ঘটনাস্থানে যায় এবং তাদের ফিরিয়ে আনি। পরবর্তীতে তারা স্কুলছাত্রীদের বাড়িতে হামলা করেছে এমন সংবাদ শুনে আমি মশিয়ার রহমানের বাড়িতে যায় এবং সুজনসহ তার সাথে থাকা সকলকে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। তিনি আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে তিনি যে অভিযোগ তুলেছেন তা সঠিক নয়। এটি সম্পন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। হাসাদহ ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সুজন ও সোহানার মধ্যে একটি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বেশ কিছু দিন আগে। এ বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের সদস্যদের সাথে আমরা বসেছিলাম এবং তা সমাধান করে দিয়েছিলাম। হঠাৎ বৃহস্পতিবার দুপুরে সুজন স্কুলের সামনে গেলে সোহানার বাবা তাকে একটি চড় মেরেছিল বলে আমি শুনেছি। তবে সোহানার বাবা মশিয়ার আমাকে জানায়, সুজন তার মেয়েকে স্কুলের সামনে উত্যাক্ত করেছে। এ বিষয়টি শুনে আমি আমার ইউপি সদস্যদের ঘটনাস্থানে পাঠায় এবং তা সমাধান করি। পরবর্তীতে আমি শুনতে পারলাম দুপুরে সুজন ও তার দলবল মিলে মশিয়ারের বাড়িতে হামলা করেছে। আমি সেখানে যায় এবং বাড়িতে যেয়ে দেখি ঘরের ভিতরে কিছু আসবাব পত্র পড়ে আছে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুর রহমান ঘটনার সত্যাতা স্বীকার করে বলেন, হাসাদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর স্কুলছাত্রীর উত্যাক্ত করাসহ তার বাড়িতে হামলার বিষয়ে স্কুলছাত্রীর বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ঘটনাস্থানে দ্রুত পুলিশের একটি টিম ছুটে যায় এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে এ বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে তদন্তের পরে আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।