জানা গেছে, রায়পুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর মাঠে তিন ফসলি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ প্রকল্পের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে তদন্তে আসেন চার সদস্যের একটি দল। এসময় কৃষকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কৃষকদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা তাহাজ্জত হোসেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বিক্ষোভকারীরা। এরই জের ধরে সন্ধ্যার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত কীটনাশক ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যায় রায়পুর বাজারে আমার দোকানে বসেছিলাম। এসময় স্থানীয় চেয়ারম্যান মির্জা তাহাজ্জতের দুই ছেলে সবুজ মির্জা ও সাচ্চু মির্জাসহ আরও কয়েকজন দোকানে ঢুকে আমাকে রড দিয়ে আঘাত এবং দোকান ভাঙচুর করে চলে যায়। মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হলে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
আহত কৃষক ওসমান গনি বলেন, ‘সকালে কৃষ্ণপুর গ্রামে ত্রিফসলি জমি নিয়ে কৃষকদের আন্দোলনে আমি ছিলাম। বিকেলে রায়পুর বাজারে এলে চেয়ারম্যানের দুই ছেলের নেতৃত্বে কয়েকজন এসে আমার ওপর হামলা করে।’
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাবাহ বিন মজিদ বলেন, ‘দুইজন জখম হয়ে হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে একজন ওখান থেকে সেলাই দিয়ে এসেছে। অন্যজনের মাথায় আমরা কাটা দেখেছি। আপাতত তারা ভালো আছে। তবে সিটি স্ক্যান ব্যতীত আসলে কিছু বলার সুযোগ নাই। আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে পর্যবেক্ষণে রাখব।’
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা তাহাজ্জত হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমি বাজার থেকে বাড়ি চলে আসার পর শুনতে পাই সাজ্জাদ ও আকবর মেম্বারের নেতৃত্বে আমার দলীয় অফিসে হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে আমার অফিসে থাকা একটি টেবিল, ২০টি প্লাস্টিকের চেয়ার ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে তারা।’
হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকালে কৃষ্ণপুর গ্রামে যুগ্ম সচিব এসেছিলেন তদন্ত করার জন্য। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি সেখানে ছিলাম। সে সময় উচ্ছৃঙ্খল মানুষ আমার গায়ে হাত তোলে। তারা হয়ত ভেবেছে আমি কোম্পানির লোকজনের সাথে আছি।’ তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমি বাজারে ছিলাম না। তাই কী ঘটেছে সঠিক জানি না।’ তবে তার অফিসে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি আইনি পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান জানান, ‘সন্ধ্যায় একটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এলাকায় যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও দুষ্কৃতিকারীদের ধরতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমি ও জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে রয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’