নিউজ ডেস্ক: জীবননগরে অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষায় খাতা দেখাকে কেন্দ্র করে উথলী গ্রামে দু’গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে। এতে পরীক্ষার্থীসহ দু’পক্ষের ৪ জন আহত হয়েছে। আহতরা হচ্ছেন- জীবননগর উপজেলার উথলী মসজিদপাড়ার আবু তালেবের দুই ছেলে জেএসসি পরীক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন (১৮), আবু বকর (৩০), সিরাজুল ইসলামের ছেলে তৌফিক (২২) ও একই পাড়ার মৃত আমদ আলীর ছেলে সামসুল হক (৫০)। গতকাল সোমবার সকালে উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে খাতা দেখাকে কেন্দ্র করে বিল্লাল ও নয়ন নামের দুই স্কুলছাত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই সূত্র ধরে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দুই ছাত্রের অভিভাবকদের মধ্যে সংঘর্ষে পরীক্ষার্থী বিল্লাহসহ উভয় পক্ষের ৪ জন রক্তাক্ত জখম হয়। আহতরা জীবননগর স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি রয়েছে।
আহত পরীক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন বলেন, পরীক্ষা দেওয়ার সময় আমি পিছনে তাকাই তখন নয়ন পিছন থেকে আমার গালি দেয়। পরীক্ষা শেষ হলে আমি বাড়ি ফিরার সময় সে রাস্তার মাঝে সাইকেল গতিরোধ করে আমাকে আটকিয়ে মেরে একটি দাঁত ভেঙে দেয়। আমি বাড়ি ফিরে আমার ভাইয়ের কাছে বললে তারা নয়নের পরিবারের লোকজনের কাছে জিজ্ঞেস করতে গেলে নয়ন, তার দাদা সামসুল হক ও তার ভাই আসকার, নসের, খোঁকাসহ ৭-৮ জন দেশীয় হাসুয়া, রড, বাঁশ দিয়ে আঘাত করে আমাদের রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় আমরা প্রাণ বাচাঁতে আত্মচিৎকার করলে পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে আসে এবং আহত অবস্থায় আমাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করে।
নয়নের দাদা আহত সামসুল হক জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবু বক্কর, বিল্লাল ও তৌফিকসহ বেশ কয়েকজন রড, বাঁশ ও লাঠি নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে আমার নাতি ছেলে নয়নকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে তাদেরকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। আমি জীবন বাঁচাতে চিৎকার করলে আমার ভাইয়েরা ছুটে আসে এবং আমাকে উদ্ধার করার জন্য তখন তাদের উপরও ওরা হামলা চালায়।
এ বিষয়ে উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হইনি।
উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন জানান, স্কুলে অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষা চলাকালীন সময় দশম শ্রেণীর ছাত্র বিল্লাল হোসেন ও নবম শ্রেণীর ছাত্র নয়নের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় বলে আমি শুনেছি। তবে খাতা দেখাদেখির ঘটনা সত্য নয়। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. হেলেনা আক্তার নিপা জানান, উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষের পর হাসপাতালে ৪ জন ভর্তি হয়। এর মধ্যে তৌফিকের অবস্থা একটু গুরুত্বর, অন্যদের তেমন কোন সমস্যা নাই
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, উথলী গ্রামের যে সংঘর্ষ হযেছে এমন কোন সংবাদ আমি পাইনি এবং কেউ কোনো অভিযোগও দেয়নি। যদি এমন কোনো অভিযোগ আসে তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।