নিউজ ডেস্ক:জীবননগরে সাপে কেটে আনিকা (১৮) নামের এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে জীবননগর পৌর শহরের রাজনগরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। সাপে কামড়ালে প্রথমে তাকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত কলেজছাত্রী আনিকা যশোর এম এম কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ও জীবননগর পৌর শহরের রাজনগরপাড়ার মোটরসাইকেলের ম্যাকানিক হাতেম আলীর মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আনিকার পায়ে সাপে কামড় দেয়। এ সময় কলেজছাত্রী চিৎকার করলে পরিবারের লোকজন তাঁকে সাপে কেটেছে বলে দ্রুত চিকিৎসার জন্য জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে সাপে কাটা এন্টিভেনম সিরাম ইনজেকশন না থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে তিনটি ইনজেকশন দিয়ে বাইরে থেকে ইনজেকশন কেনার জন্য বলেন। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ফার্মেসিতে ইনজেকশন কেনার জন্য ছোটাছুটি করলেও কোথাও ইনজেকশন না থাকায় হতাশ হয়ে হাসপাতালে ফিরে আসেন। ততক্ষণে ওই কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়।
এদিকে, নিহত কলেজছাত্রীর বাবা হাতেম আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘ডাক্তার সাহেব যদি আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমার মেয়েকে ইনজেকশনগুলো দিত, তাহলে আমার মেয়ের মৃত্যু হতো না। আমার মেয়ে ইনজেকশনের অভাবে মারা গেল।’
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু এন্টিভেনম সিরাম ইনজেকশন নয়, এখানে কুকুরে কামড়ালে র্যাবিকস ইনজেকশনও পাওয়া যায় না। যার জন্য চরম বিপাকে পড়তে হয় হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘সাপে কাটা এন্টিভেনম সিরাম এবং কুকুরে কামড়ানোর র্যাবিকস ইনজেকশনগুলো এখনো পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে দেওয়া হয়নি। যার ফলে আমরা রোগীদের সেবা দিতে পারছি না। তবে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় আমরা এ ইনজেকশনগুলো খুব শিগগিরই হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করব।’ এদিকে, কলেজছাত্রীর মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।