নিউজ ডেস্ক:
হলি আর্টিজানের ঘটনার পর জাপানি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে ভয় কাজ করছিল তা এখন অনেকটাই আমরা লাঘব করতে পেরেছি। জাপানিরা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী। তারা বাংলাদেশে আসছে।
চলতি মাসের ১ আগস্ট থেকে ৪ আগস্ট সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সিংগাপুর ও জাপানের বিনিয়োগকারীদের এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তার অগ্রগতি জানাতে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আবুল কাসেম খান, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-সিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুরের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। এছাড়া জাপানের ব্যবসায়ী এজেন্সিগুলো আমাদের কী দিতে পারে এবং আমরা তাদের কী দিতে পারি- এসব নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আসলে হলি আর্টিজান হামলায় জাপানিরা বেশি আতঙ্কিত হয়েছে। তাদের ফোকাস করে আমরা আলোচনা করেছি। তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, তাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে ভীতি কেটে গেছে।
তিনি বলেন, প্রায় এক মাস আগে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন বিজনেস ফেডারেশনের (এসবিএফ) একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফরে আসে। সে সময় বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে তারা। সে বিষয়েও আমাদের আলোচনা হয়। তারা বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন।
আমিনুল ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বিশ্বে তৃতীয়। বিশ্বব্যাংকের ডুইং বিজনেস বা ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে তারা এক-দুইয়ের মধ্যে থাকে। ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭৬তম। আমরা পাঁচ বছরের মধ্যে এ সূচকে ১০০ দেশের মধ্যে উন্নীত হতে চাই।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ইচ্ছে আছে, লক্ষ্য আছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ বিশ্বমানের নিয়ে যাওয়া। আমরা ব্যবসায়ীদের সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছি। ব্যবসায়ীরা আমাদের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করছে। আমরা ক্রমশ অগ্রগতি করছি।
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু বলেন, আমাদের কোম্পানি আইনের পরিবর্তন করতে হবে। এটি পরিবর্তন অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। অবশ্য কোম্পানি আইন আধুনীকরণ করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এটি সংশোধিত হলে বিনিয়োগের জটিলতা কমবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, পলিসি তৈরি করার সময় আমাদের যেন সঙ্গে রাখা হয়। আনেক সময় দেখা যায় পলিসি তৈরি করা হয়, আমরা আবার সেটা নিয়ে ফাইট করছি। পলিসি তৈরিতে আমাদের মতামত নেওয়া হলে আমাদের আর ফাইট করতে হবে না।
এমসিসিআই সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, সিঙ্গাপুর দক্ষিণ এশিয়ার যে ২০টি দেশে বিনিয়োগের তালিকা করেছে তার মধ্য বাংলাদেশ ১৩তম অবস্থানে আছে। যেটা আগে ২০-এর মধ্যে ছিল না।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর সফরের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালক শমী কায়সারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।