নিউজ ডেস্ক:
রাষ্ট্রপতির কাছে একটি ‘নিরপেক্ষ’ ও ‘সম্পূর্ণ স্বাধীন’ নির্বাচন কমিশন গঠন এবং বর্তমান সংসদেই এর আইন পাস চেয়েছে এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)। পাশাপাশি দলটি বর্তমান নির্বাচনপদ্ধতি পাল্টে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদে আসন নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে দেড় ঘণ্টা আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এসব কথা বলেন।
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে বিএনপির পর গতকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিল জাপা। আজ বিকেলে অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি ও আবদুল কাদের সিদ্দিকীর কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে আলোচনার জন্য গতকাল আরও ছয়টি দলকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এর মধ্যে ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, ২৯ ডিসেম্বর ইসলামী ঐক্যজোট ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), ২ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি (জেপি), ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমন্ত্রিত দলগুলোকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সময় পরিবর্তনের জন্য আবেদন করায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) ২৬ ডিসেম্বর আলোচনার জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাপার ব্রিফিং: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার পর কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ব্রিফিংয়ে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমরা আশাবাদী। চলমান রাজনীতি ও জাতীয় নির্বাচনে অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে আস্থাহীনতা ও দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, চলমান সংলাপের মধ্য দিয়ে তা মুছে ফেলার পথ উন্মোচিত হবে। আমরা রাষ্ট্রপতির প্রতি আস্থা রাখি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সবার সঙ্গে আলোচনার পর রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে পারবেন। ফলে আগামী নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে বিশ্বাস করি।’ জাপার মহাসচিব বলেন, সার্চ কমিটির জন্য তাঁরা রাষ্ট্রপতিকে কোনো নাম দেননি। তবে রাষ্ট্রপতি চাইলে দেবেন।
ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া দলের লিখিত প্রস্তাবের কপি সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। তাতে ‘স্বাধীন’ নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে হলে নিজস্ব বাজেট এবং অর্থ ব্যয়ে কমিশনের নিজস্ব ক্ষমতা থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশনের সচিবালয় সম্পূর্ণভাবে কমিশনের অধীন থাকবে। অর্থাৎ কমিশনের লোকবল কমিশনই নিয়োগ করবে। আর নির্বাচন কমিশনারেরা হবেন নিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য, চারিত্রিকভাবে স্বচ্ছ, রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় নন—এমন ব্যক্তি।