নিউজ ডেস্ক:
আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জমা দেওয়া কাগজপত্র জব্দকৃত সোনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তারা এ পর্যন্ত ১২৫ কেজি সোনার স্বপক্ষে কাগজপত্র দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটা বিচ্ছিন্ন কিছু নথিপত্র বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই গোলজার আহমেদ, দিলদার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম কমিশনার মো. শফিউর রহমান এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম কমিশনার বলেন, আমরা আপন জুয়েলার্সে সাময়িক আটককৃত পণ্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সুযোগ দিয়েছি। অভিযানকালে বিল অব এন্ট্রি ও পণ্য আমদানির তালিকা ইত্যাদি আপন জয়েলার্স কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি। তারপর আমরা ন্যায়বিচারের স্বার্থে সময় দিয়েছি।
তিনি বলেন, প্রথম যখন আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে ১৮ মে সময় দেওয়া হলো, তারা আসেননি। এরপর সময় বৃদ্দি করে ২৫ মে সময় দেওয়া হলে তারা তাদের পাঁচ শাখা থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে। আজ ৩০ মে কিছু কাগজপত্র নিয়ে এসেছে। যা জব্দকৃত ৫০০ কেজি স্বর্ণের বিপরীতে খুবই সামান্য।
শফিউর রহমান বলেন, আজ তারা যে কাগজপত্র নিয়ে এসেছেন, তা তারা ব্যাগেজ সুবিধায় একজন যাত্রী যে সোনার বার আনতে পারেন সেই কাগজপত্র। তারা দাবি করেছেন, তারা যাত্রীদের কাছ থেকে স্বর্ণ কিনেছেন। কিন্তু একজন সোনার ব্যবসায়ী প্যাসেঞ্জার কর্তৃক আনা সোনা ক্রয় করে ব্যবসা করে, এটা মেনে নেওয়া যায় না বা আইনও তা অনুমোদন করে না। তা ছাড়া ভ্যাট আইন অনুসারে ক্রয় করার ক্ষেত্রে ক্রয় রশিদ থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাও তারা দেখাননি। তারপরও তারা যা দাখিল করেছেন তা আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখব।
সময় চাওয়ার বিষয়ে যুগ্ম কমিশনার বলেন, তাদেরকে দুই দফা সময় দেওয়া হয়েছে, এরপর সময় চাওয়াটা কতটা যৌক্তিক। তাছাড়া আমাদের আইনের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আইন অনুসারে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করার বিধিবদ্ধতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আর বেশি সময় দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমরা এ পর্যন্ত যতটুকু তথ্য পেয়েছি, আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ যে কাগজপত্র দেখিয়েছে, তা কর কর্তৃপক্ষ ও ভ্যাট কর্তৃপক্ষ দ্বারা স্বীকৃত নয়। শুল্ক গোয়েন্দার পক্ষে ওই কাগজপত্রের মাধ্যমে জব্দকৃত সোনার বৈধতা দেওয়ার সুযোগ কম। তারপরও কাগজপত্র রাখা হয়েছে। আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখব। কাগজপত্র দেখাতে না পারলে কাস্টমস আইনে মামলা হবে। আর স্বর্ণ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে। এর আগে জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই গোলজার আহমেদ, দিলদার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে দ্বিতীয়বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করে শুল্ক গোয়েন্দা।
গত ১৪ ও ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ আপন জুয়েলার্সের গুলশানের দুটি শাখা, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ার শাখায় অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণালঙ্কার ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড আটক করে। বৈধ দলিলাদি দেখাতে না পারায় এবং আমদানি ও ক্রয়ের উৎস সন্দেহজনক হওয়ায় সেগুলো সাময়িকভাবে জব্দ করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের মধ্যে ১০ কিলোগ্রামের বেশি স্বর্ণ গ্রাহকের রয়েছে দাবি করে জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ। তবে তারা শেষ পর্যন্ত ১৮২ গ্রাহকের সাড়ে ৩ কেজি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার স্বপক্ষে কাগজপত্র দেখাতে সক্ষম হয়।