নিউজ ডেস্ক:
ছোড়া মাত্রই ধ্বংস হয়ে গেল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। রবিবার দেশটির পূর্ব উপকূলের সিনপো থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছিল বলে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে। লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারেনি ক্ষেপণাস্ত্রটি। উৎক্ষেপণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাতে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে খবর। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ফ্লাইট আলাস্কা থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ছুড়েছিল উত্তর কোরিয়া। কিন্তু উৎক্ষেপণ হওয়া মাত্রই সেটি ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে বোঝা যায়নি ক্ষেপণাস্ত্রটির ক্ষমতা।
গত ৫ এপ্রিল যেখান থেকে জাপান সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল উত্তর কোরিয়া, রবিবারও সেই সিনপো থেকেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়। এই সিনপোকে কেন্দ্র করেই সম্প্রতি কিম জং উনের সামরিক তৎপরতা সবচেয়ে বেশি। সিনপো নৌঘাঁটি হল কিম জং উনের সবচেয়ে বড় সাবমেরিন ঘাঁটি। মার্কিন উপগ্রহ চিত্র বলছে, এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই সিনপোতে উত্তর কোরিয়ার সাবমেরিনগুলির তৎপরতা বেড়েছে। কিন্তু রবিবার সেখান থেকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই যেভাবে ভেঙে পড়ল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, তাতে কিম জং উনের যথেষ্ট মুখ পুড়েছে।
শনিবারই কিমের সরকার রাজধানী পিয়ংইয়ং-এর বুকে সেনা কুচকাওয়াজে নিজের সামরিক শক্তির বিপুল প্রদর্শনী করেছেন। কমিউনিস্ট উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা তথা কিম জং উনের দাদু কিম ইল সুং-এর ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ওই সামরিক কুচকাওয়াজ আয়োজিত হয়েছিল। উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তির এই বিশাল প্রদর্শনী আসলে আমেরিকার উদ্দেশ্যে কিমের বার্তা। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, আজ ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়া হয়েছিল আমেরিকাকে চোখ রাঙাতেই। উত্তর কোরিয়াকে চাপে ফেলতে কোরীয় উপকূলের দিকে যে স্ট্রাইক গ্রুপ পাঠিয়েছে মার্কিন নৌসেনা, তার প্রেক্ষিতেই উত্তর কোরিয়া আস্ফালন বাড়িয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। কিন্তু আস্ফালন করতে গিয়ে যেভাবে ভেঙে পড়ল ক্ষেপণাস্ত্র, তা পিয়ংইয়ংকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের দক্ষিণ কোরিয়া সফর আগেই নির্ধারিত ছিল। তিনি দক্ষিণ কোরিয়া পৌঁছানোর পর উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের বিষয়ে তাকে জানানো হয়েছে। পেন্সের সঙ্গে ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পেরও কথা হয়েছে বলে মার্কিন প্রশাসন সূত্রের খবর। মার্কিন বিদেশ সচিব জেমস ম্যাটিস বলেছেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার ব্যর্থ ক্ষেপণাস্ত্রের কথা প্রেসিডেন্ট জানেন। এ নিয়ে প্রেসিডেন্টের নতুন কিছু বলার নেই। ’’
দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল সিকিওরিটি কাউন্সিল রবিবার বৈঠকে বসেছিল। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রেক্ষিতেই এই বৈঠক ডাকা হয়। সোল জানিয়েছে, এর পরে যদি আর কোনও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয় বা পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, তা হলে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এমন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যা সহ্য করার ক্ষমতা তাদের নেই।