চুয়াডাঙ্গার গিরিশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকের মারামারির জেরে
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদরের গিরিশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দুই ছাত্র ও বাইরে থেকে আগত এক বখাটের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলো বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র সোহাগ হোসেন, ৯ম শ্রেণির ছাত্র রাজা মিয়া ও গিরিশনগর গ্রামের লাইফ ইসলামের ছেলে জিয়া।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার গ্রীষ্মকালীন ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও ক্রীড়া শিক্ষক শাহ্ আলমের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি। এরপর অফিসের মধ্যে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে শফিকুলকে আঘাত করতে শুরু করেন শাহ্ আলম। পরে অফিসে উপস্থিত থাকা শিক্ষকেরা শাহ্ আলমকে থামিয়ে পরিবেশ শান্ত করেন। কিছুক্ষণ পর শিক্ষক শফিকুল বিদ্যালয়ের অফিসের সামনে ক্রীড়া শিক্ষক শাহ্ আলমকে লাঠিপেটা করেন।
শিক্ষক শফিকুল জানান, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে মাঠ না থাকায় ক্রীড়া শিক্ষক শাহ্ আলমের পরিচালনায় গ্রীষ্মকালীন ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রশিক্ষণ চলছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মাঠে। তবে এ খেলার কথা বলে অনেক শিক্ষার্থী প্রায়ই ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে বলে কয়েকজন অভিভাবক আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি তাদের চিহ্নিত করে রেখেছি। রোববার যখন তারা ক্লাসে আসে, আমি তাদের গত দিনের ক্লাসে না থাকার কারণ জানতে চাইলে তারা বলে, আমরা শাহ্ আলম স্যারের সঙ্গে মাঠে খেলতে গিয়েছিলাম। তারা যে শাহ্ আলম স্যারের সঙ্গে মাঠে খেলা করেছে, এর প্রমাণ হিসেবে একটি চিঠি তাদের স্বাক্ষর করে আনতে বলেছিলাম আমি। এ খবর শুনে শাহ্ আলম স্যার আমার ওপর ক্ষেপে গিয়ে অফিসের মধ্যে ডেকে নিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করেন।’
এ বিষয়ে ক্রীড়া শিক্ষক শাহ্ আলম বলেন, ‘আমার একটু ভুল হয়ে গিয়েছিল, তবে সে দিনই এ ব্যাপারে আমরা সমন্বয় করে নিয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘গত দিনের ঘটনা আমরা মিটিয়ে ফেলেছি। তবে সোমবার সকালে মোবাইলে কল করে গিরিশনগর গ্রামের লাইফের ছেলে জিয়া আমার কাছে মারামারির ঘটনা শুনতে চাইলে আমি তাকে সব কিছু বলি। একপর্যায়ে জিয়া বলে ‘‘বিচার হয়নি। যদি সঠিক বিচার না করতে পারিস, তাহলে তোর খবর আছে।’’ পরে তার কথার ওপর রাগ করে আমিও তাকে একটু বকাবকি করি। কিছুক্ষণ পর জিয়া, রাজা ও সোহাগ আমার অফিসে ঢুকে আমাকে বিদ্যালয়ের সবার সামনে মারধর করে। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি হায়দার মল্লিকসহ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। সভায় হায়দার মল্লিক এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জিয়া বলেন, ‘আমি ভুল করে স্যারের গায়ে হাত তুলেছি, অন্যায় করে ফেলেছি। আমি স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’ এ দিকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।