চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গা পুলিশের স্বাসরুদ্ধকর ১৩ ঘন্টার নিরলশ প্রচেষ্টায় নিখোঁজ হওয়া ৩ শিশুসহ ৪ জন অক্ষত অবস্থায় তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়া হলো। সোমবার ভোর রাতে দামুড়হুদার হেমায়েতপুর থেকে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার (২৬শে মে) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। হারানো ৩ শিশুসহ ৪ জনকে ফিরে পেয়ে পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং তাদেরকে কোলে তুলে নেয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বুজরুক গড়গড়ি এলাকার খোকনের ছেলে আশিক (২০), রহমত (১০) ও শিশুকন্যা আশফিয়া (৩) এবং সাগরের ছেলে সোহান (১০) সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে চার ভাই বোন ঈদের আনন্দ করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। আশিক তাদের মধ্যে সবার বড় এবং সে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। সন্ধ্যা লাগার পরও তারা যখন বাড়িতে না ফেরার কারনে খোকন তার পরিবারের লোকজনকে সাথে নিয়ে এলাকায় এবং সকল আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে এবং আশিকের সাথে থাকা মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে তারা হতাশ হয়ে পড়েন। কোন উপায় না পেয়ে সন্ধায় তারা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করে। বিষয়টি পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের নিকট পৌছালে তিনি সর্বোচ্চ দুরুত্ব দিয়ে নিখোঁজ হওয়া ৪ জনকে রাতেই উদ্ধারের নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ আশিকের মোবাইলের সর্বশেষ অবস্থান নির্ণয় করেন। আশিকের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলার পর নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমান পওয়া যায়। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফখরুল আলম খানের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাতেই দামুড়হুদার হেমায়েতপুর গ্রামে আশিকের শ্যালক রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ থেকে ৬ মাস আগে দামুড়হুদার লোকনাথপুর গ্রামের বদর উদ্দিনের মেয়ে বেলি খাতুনের সাথে আশিকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আশিকের সাথে ঘর করতে রাজি না হওয়ায় বেলি খাতুনের সাথে আশিক ও তার পরিবারের লোকজনের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। বেলিকে ফিরে পওয়ার আশায় আশিক তার শ্যালক রফিকুলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। রফিকুলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যই মুলত ভাই-বোনসহ রাতেই আশিক সেখানে হাজির হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঐ সময় সন্ধ্যারাত ও কিছুটা ঝড় বৃষ্টি হওয়ায় এবং চুয়াডাঙ্গা থেকে হেমায়েতপুরের দুরত্ব ২০ কিলোমিটার হওয়ার কারনে আশিক ও তার ভাইবোন নিয়ে ফিরে আসতে পরেনি। এমনকি মোবাইল ফোনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অবশেষে পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের সরাসরি তত্বাবধানে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফখরুল আলম খানের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা সদর ফাঁড়ির এসআই ওহিদুল ইসলাম বিপিএম ও সদর থানার একটি চৌকস টিম এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের মধ্যে দিয়ে ভোর ৪ টার দিকে চারজনকে উদ্ধার করেন।