নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের পারকৃষ্ণপুর গ্রামের ইউনিয়ন মাঠের একটি শিমখেত থেকে ৭ বছরের এক শিশুকন্যার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণ করা হচ্ছে, শিশুটিকে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। শিশুটির নাম সুমাইয়া খাতুন, বয়স ৭ বছর। সে পারকৃষ্ণপুর গ্রামের ইউনিয়নপাড়ার নাসিরুলের মেয়ে ও ছয়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনাস্থল থেকে লাশ ও আলামত উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অভাবের সংসারে ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সুমাইয়ার বাবা যান কাঠ কাটতে ও মা যান অন্যের জমিতে তুলা ও মরিচ তুলতে। আর একটু সকাল হলেই প্রতিবন্ধী ভাইকে বাড়িতে রেখে সুমাইয়া খাতুন যায় স্কুলে। প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল শনিবার পারকৃষ্ণপুর গ্রামের ইউনিয়নপাড়ার কাঠুরিয়া নাসিরুল ও দিনমজুর মা পলি খাতুনের শিশুকন্যা ছয়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন বেলা দেড়টার দিকে স্কুল থেকে খাবার খেতে আসে বাড়িতে। এ সময় সুমাইয়া তার মা পলি খাতুনকে বাড়িতে না দেখতে পেয়ে বাড়ির অদূরে ইউনিয়ন মাঠে যায় খুঁজতে। এরপর থেকেই সুমাইয়াকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। সুমাইয়ার নিখোঁজের বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিকেল থেকে শুরু হয় মাইকিং। তার নিজ গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে মাইকিং করা হয়। সন্ধ্যার আগে থেকেই ইউপি সদস্য খায়রুল বাসারের নেতৃত্বে ৮-৯টি দল গঠন করে গ্রামের বিভিন্ন স্থান ও মাঠে সুমাইয়াকে খুঁজতে নামে স্থানীয় যুবসমাজ। তবে সন্ধ্যা পার হলেও সুমাইয়ার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়ে তার পরিবারসহ এলাকাবাসী। পরে পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের অদূরে ইউনিয়ন মাঠে সুমাইয়াকে খুঁজতে যায় স্থানীয় যুবসমাজ। এরপর রাত ৯টার দিকে একই গ্রামের আয়ুব আলীর শিমখেতে শিশু সুমাইয়ার বিবস্ত্র লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের খবর দেন যুবকেরা। এ খবর এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নারী-পুরুষ সুমাইয়ার লাশ দেখতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেল, দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস, দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ শেখ মাহাবুবুর রহমান ও পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর ঘটনাস্থল থেকে সুমাইয়ার লাশ ও ধর্ষণের আলামত উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, ‘ঘটনাস্থল থেকে সুমাইয়ার বিবস্ত্র লাশ ও আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। তবে আলামত দেখে প্রথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, শিশুটিকে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতেদের আটকের জন্য জোর অভিযানসহ হত্যার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ মাঠে রয়েছে।’