গত তিন মাসে প্রায় দেড়’ডজন মোটরসাইকেল চুরি : নেই উদ্ধার ও চোর আটক
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা শহরসহ জেলাজুড়ে হঠাৎ বেড়েছে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা। সক্রিয় চোর সিন্ডিকেট চলতি বছরের মে থেকে জুলাই মাসের গতকাল পর্যন্ত জেলা, উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় দেড়’ডজন মোটরসাইকেল চুরি’র ঘটনা ঘটালেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত মোটরসাইকেল উদ্ধার বা চোর সিন্ডিকেট সনাক্ত করে তাদের আটকে রয়েছে শুন্যের কোটায়। পুলিশের ব্যর্থতায় হতাশ জেলার সাধারন মোটরসাইকেল চালক-মালিকরা। তবে মোটরসাইকেল চুরির পরেই সংশ্লিষ্ট এলাকার থানাগুলোতে চুরি সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারন ডায়েরি (জিডি) করেও মোটরসাইকেল উদ্ধার বা চোর আটকে পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়ার মত নয় বলে জানান চুরি হওয়া মোটরসাইকেলের অনেক মালিক। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের সিনেমা হলপাড়ায় ঘরের বারান্দা থেকে অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল চুরির সময় হকপাড়ার একাধিক চুরি মামলার আসামী হৃদয় (২২) নামে একজনকে আটক করে গণধোলাই শেষে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। এছাড়া গত ০৬-০৭-১৮ ইং তারিখে সরোজগঞ্জ জলিবিলা রোড থেকে ওবাইদুর রহমান নামে একজনের ১৫০ সিসি’র ডিসকভারসহ সরোজগঞ্জ বাজারের সততা ফার্মেসীর মালিক তৈয়ব আলীর ডিসকভার ১৩৫ সিসির মোটরসাইকেল চুরি, গত ০২-০৭-১৮ইং তারিখে দিবাগত গভীর রাতে দামুড়হুদা মুক্তারপুরে ঘরের বারান্দা থেকে একটি অ্যাপাচি আরটিআরসহ একটি ডিসকভার ১৩৫ সিসি’র মোটরসাইকেল চুরিসহ গত ০৯-০৭-১৮ ইং তারিখে রেলবাজার কৃষি ব্যাংকের নিচ থেকে এ্যাড. শফিকুর রহমান শফি’র, ডিসকভার ১৫০সিসি মোটরসাইকেল চুরি, গত ১৭-০৭-১৮ইং তারিখ মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের সিনমো হল সড়কের বিগ বাজারের শপিংমলের সামনে থেকে কালো পালসার ও চুয়াডাঙ্গা ব্রাক অফিস থেকে রফিকুর রহমান বাচ্চ’ুর লাল-কালো রঙের পালসার মোটরসাইকেল চুরি’রসহ গত তিন মাসে প্রায় দেড়’ডজন মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। এছাড়া গত কয়েকদিনে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৯টি মোটরসাইকেল চুরির খবর পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, গত দু’মাসে প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। একটি সঙ্গবদ্ধ চোরের দল এই চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে সচেতন মহল ধারনা করছে। পুলিশ ও মোটরসাইকেল মালিকদের চোখ এড়িয়ে প্রতিনিয়ত এভাবে একের পর এক মোটরসাইকেল চুরি হওয়াতে চোর আতঙ্কে রয়েছে জেলার সাধারন মানুষ। মোটরসাইকেল মালিকরা নিরাপত্তার জন্য একাধিক তালা ব্যবহার করলেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে সুকৌশলে শত শত লোকের ভীড়ে তালা ভেঙ্গে মুহুর্তের মোটরসাইকেল চুরি নিরাপদস্থানে চলে যাচ্ছে চোরেরা বলে অনেকে অনুমান করছেন।দিন-দুপুরে অফিস আদালতের সামনে থেকে, রাতের আধারে বাসা বাড়ির দরজার তালা অথবা কলাপসিবল গেট ভেঙ্গে পালসার, ডিসকোভারি, প্লাটিনা, হিরো ফ্যাশান, গ্লামার, ইয়ামা, টিভিএস, বাজাজ সিটি-১০০, সুজোকিসহ দামি দামি ব্যান্ডের মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে।এবিষয়ে চুরি হওয়া একটি মোটরসাইকেলের মালিক জানান, চুরির পরে সঙ্গে সঙ্গে থানায় জিডি করেছি। কিন্তু অনেক হয়ে গেল পুলিশ কোন হদিস করতে পারেনি। নিজের চেষ্টায় এদিক-সেদিক অনেক খোজাখুঁজি করছি কিন্তু মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে পারেনি।সক্রিয় এই চোরচক্রের হাত থেকে বাদ পড়ছেনা সাংবাদিক, আইনজীবি, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, ঠিকাদার, এনজিও কর্মীসহ সাধারণ জনগণ। চুরি হওয়ার কথা পুলিশ স্বীকার করলেও উদ্ধার-আটকে তাদের খাতা এখনো শুন্য।এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) তরিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান স্যারের নির্দেশে পুলিশের সকল ইউনিট সর্বদা জনগণের নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে। এরআগে অনেক চোরচক্রকে আমরা ধরেছি এবং আইনের আওতায় এনেছি। মাঝে মাঝে দু’একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ চোরকে আটকসহ মোটরসাইকেল উদ্ধারে গুরুত্ব দিয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন। খুব শিঘ্রই সক্রিয় চোর সিন্ডিকেটকে ধরা হবে।এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জেলার মকল মোটরসাইকেল চালক ও মালিকদের উদ্যোশে পরামর্শ দিয়ে বলেন, মোটরসাইকেল কোথায় রাখছেন, কিভাবে রাখছেন, যথেষ্ঠ নিরাপত্তা আছে কিনা? সে বিষয়ে একটু সর্তক থাকলেই চুরি কমে যাবে। তাছাড়া চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের তৎপরতার কারণে তেমন চুরির ঘটনা ঘটেনা।