চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় চক্ষুশিবিরে চোখ হারানো রোগীদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানিতে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. মো. খাইরুল আলম। গতকাল সকালে তারা আদালতে উপস্থিত হন। হাইকোর্টের জারি করা রুলের জবাব না দেওয়ায় গত ৩ জুলাই তাদের তলব করা হয়। শুনানির শুরুতে আবুল কালাম আজাদ ও খাইরুল আলম রুলের বিষয়ে তাদের লিখিত জবাব দাখিলে সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তাদের জানান, লিখিত জবাব দাখিলের জন্য সময় দেওয়া হবে। তা ছাড়া যেহেতু দু’জনই আছেন, তাই তাদের কথাও আদালত শুনবেন। এ পর্যায়ে আদালত সিভিল সার্জনের কাছে জানতে চান, চক্ষুশিবির করার আগে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি-না? জবাবে তিনি জানান, নেওয়া হয়নি। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য শুনতে চান আদালত।
আদালত বলেন, কতিপয় দুর্বৃত্তের কার্যক্রমে চিকিৎসা ক্ষেত্রের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দেশে অনেক স্বনামধন্য চিকিৎসক এবং ভালো মানের চিকিৎসাসেবার সুযোগ থাকলেও ভুল চিকিৎসার ভয়ে রোগীরা পাশের দেশে চলে যাচ্ছে। এতে দেশের মুদ্রাও বিদেশে চলে যাচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিষয়েও পাবলিক পারসেপশন (জনগণের ধারণা) ভালো না। ডাক্তারদের ব্যবহার ভালো নয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডিজি আবুল কালাম আজাদকে মৌখিক নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তখন ডা. আবুল কালাম আজাদ আদালতকে বলেন, তারা মহামান্য আদালতের সঙ্গে একমত। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। চট্টগ্রামে এরই মধ্যেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় চক্ষুশিবিরের চিকিৎসায় ২০ জনের চোখ হারানোর ঘটনা প্রসঙ্গে আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ব্যাপারে দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি এরই মধ্যে যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ইমপ্যাক্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওষুধের নমুনা আইসিডিডিআরবিতে পাঠিয়েছিল। তাদের রিপোর্টে ওই ওষুধে ব্যাকটেরিয়ার নমুনা পাওয়া গেছে। কিন্তু অন্য প্রতিবেদনে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তাই তারা দুটো রিপোর্ট পর্যালোচনা করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছেন। এ সময় ডিজির উদ্দেশে আদালত বলেন, লিখিত জবাবে যেন ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটিত হয়, যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়। পরে আদালত আগামী ১৬ জুলাই এ মামলায় জারি করা রুলের পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। পাশাপাশি ডিজি এবং সিভিল সার্জনকে আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন সুভাষ চন্দ্র দাস। অন্যদিকে ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।