নিউজ ডেস্ক:
চুয়াডাঙ্গার হায়দারপুরে নবগঙ্গা খননকে কেন্দ্র করে নবগঙ্গা খাল পাড়ের দুই জমির মালিকের মধ্যে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংর্ঘষে দুই ভাইসহ তিনজন গুরুত্বর জখম হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে হাইদারাপুড় বুচতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ গুরুত্বর জখম অবস্থায় আহতদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। আহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবীলা ইউনিনের হায়াদারপুড় গ্রামের উত্তর পাড়ার মৃত শুকুর আলীর দুই ছেলে, মধু মালিথা (৪৯), জধু মালিথা (৩৬) ও একই এলাকার মৃত শমসের আলীর ছেলে রেজাউল হক (৪২)। মধু মালিথা ও জধু মালিথা অবস্থা জনক হওয়াই জরুরি বিভাগের কর্মব্যরত চিকিৎসক তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
জানা যায়, হাইদারাপুড় বুচতলা এলাকায় মধ্য দিয়ে চলে গেছে নবগঙ্গা নদী যার খনন কাজ চলমান রয়েছে। এই এলাকায় নবগঙ্গার দুই পাড়ে রয়েছে স্থানীয় শলকের একটি পুকুর ও অপর পাড়ে রয়েছে মধু মালিথা ও জধু মালিথা দুই ভায়ের ফসলী জমি। বনগঙ্গা খননের ফলে শলকের পুকুরটি খননের কারণে নবগঙ্গার মধ্যে পড়ে যেতে পরে এমন আশঙ্কায় শলক প্রভাব খাটিয়ে খননকাজকে একটু ঘুরিয়ে দিতে চাইলে মধু মালিথা ও জধু মালিথার জমি খননের মধ্যে পড়ার আশঙ্কায় পড়ে। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই এক পর্যায়ে গতকাল দুপুর ১২ টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে মধু মালিথা, জধু মালিথা ও একই এলাকার রেজাউল হক গুরুত্বর জখম হয়। চুয়াডাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায় আহতদেরকে উদ্ধার করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান আহতমদেরকে তাৎক্ষনিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং মধু মালিথা, জধু মালিথার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যত দ্রুত সম্ভব রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নেয়ার পরামর্শ দেন।
প্রতক্ষদর্শী যুবক ইসরাফিল ইসলাম জানায় , গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নবগঙ্গা খননকে কেন্দ্র করে মধু মালিথা ও জধু মালিথার সঙ্গে শলকের বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয় । এরই এক পর্যায়ে শলক পক্ষের কয়েকজন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নবগঙ্গার পাড়ে পৌছাই এবং মধু মালিথা, জধু মালিথার উপর আক্রমণ করে। এতে দেশীয় অস্ত্রের কোপে মধু মালিথা, জধু মালিথাসহ রেজাউল হক গুরুত্বর জখম হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান বলেন, বেলা ১২ টার দিকে গুরুত্বর জখম মধু মালিথা, জধু মালিথাকে জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। তাঁদের দুইজনের শরীরেই দেশীয় ধাড়ালো অস্ত্রের একাধিক জখম ছিলো। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাৎক্ষনিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান , নবগঙ্গার পাড়ে স্থানীয় শলকের একটি পুকুর ও অপর পাড়ে মধু মালিথা ও জধু মালিথা দুই ভাইয়ের জমি যেখানে এরা চাষ আবাদ করেন। বনগঙ্গা খননের ফলে শলকের পুকুরটি খননের কারণে নবগঙ্গার মধ্যে পড়ে যেতে পরে এমন আশঙ্কায় প্রভাব খাটিয়ে শলক খননকাজকে একটু ঘুরিয়ে দিতে চাইলে মধু মালিথা ও জধু মালিথার জমি খননের মধ্যে পড়ার আশঙ্কায় পড়ে। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শলকের কিছু লোকজন মধু মালিথা ও জধু মালিথাকে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এ সময় আমি নিজে ঘটনা স্থলে যেয়ে আহত মোট তিনজনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করি।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিয়োগ পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, জরুরি বিভাগ থেকে তাৎক্ষনিক চিকিৎসা শেষে পরিাবরের সদস্যরা দুই ভাইকে নিয়ে দুপুরে ১ টার পরেই রাজশাহীর উদ্দেশ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করে।