জগন্নাথ দেবের অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়
চুয়াডাঙ্গায় অতিদ্রুতই প্রতিমা বির্সজনের ঘাট নির্মাণ করা হবে -ডিসি গোপাল চন্দ্র দাস
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গাসহ মেহেরপুর ও সারা দেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা ও মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পৃথক পৃথকভাবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।
চুয়াডাঙ্গা:
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও চুয়াডাঙ্গাতে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন) চুয়াডাঙ্গার আয়োজনে বড় বাজার শ্রী শ্রী সত্য নারায়ণ মন্দিরের সামনে থেকে একটি রথযাত্রা বের হয়। এর আগে মন্দির প্রাঙ্গণে এক ধর্মীয় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কানাই লাল সরকার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক কিশোর কুমার আগরওয়ালা, যুগ্ম আহ্বায়ক প্রশান্ত অধিকারী ও সদস্য সচিব কিশোর কুমার কু-ু। আলোচনা সভা শেষে এ রথযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। আগামী সাতদিন পর উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, ‘এখানে আসার পর জেনেছি চুয়াডাঙ্গা শহরে প্রতিমা বির্সজনের ঘাট নেই। অতিদ্রুতই চুয়াডাঙ্গাতে ঘাট নির্মাণ করা হবে। মুক্তিলাভ ও শান্তি কামনায় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা করা হয়ে থাকে। আমরা এ রথযাত্রায় কামনা করি বাংলাদেশের মঙ্গল। এবারের রথযাত্রায় বাংলাদেশ যেন অতিদ্রুই বিশ্বের দরবারে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় সে কামনা করা করা হয়েছে।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জগন্নাথ দেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তাঁর অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাঁকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উদযাপিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মন্দিরের সামনে থেকে এ রথযাত্রা শুরু হয়। এর আগে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুশিল কুমার ভৌতিকা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খোন্দকার ফরহাদ আহম্মদ। বিশ্বজিৎ সাধুখাঁর উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডা. অমল কুমার বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনীন্দ্র নাথ দত্ত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রশান্ত অধিকারী, আওয়ামী লীগের নেতা সমির কুমার দে, সুজিদ কুমার, পরিমল কুমার কালু ঘোষ, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নয়ন সরকার, নিমাই রায়, হারান অধিকারী, বিদ্যুৎ সাহা, অশোক সাহা, পলাশ আচার্য, শম্ভ দত্ত, প্রশান্ত দত্ত, আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়া, প্রেসক্লাবের সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মন্টু, রাজকুমার রমেকা, বিজয় সিহি, উৎপল দত্ত, মদন সাহা, রিপন দত্ত, গণেশ আচার্য প্রমুখ। আগামী সপ্তাহে উল্টো রথযাত্রা হবে বলে জানান রথযাত্রা উদযাপন কমিটি।
মেহেরপুর:
‘রথযাত্রা, মহাদেবের পূর্ণযাত্রা’ এ স্লোগানে মেহেরপুরে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে এ রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। মেহেরপুর শহরের নায়েববাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হরিভক্তি প্রদায়নী পূজা মন্দির গিয়ে শেষ হয়। জয় জগন্নাথ, জয় জগন্নাথ, উলুধ্বনি, সাঁক ও ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসের মধ্যে দিয়ে হিন্দু ধর্মালম্বীরা রথযাত্রায় অংশ নেয়।