এক দিনের ব্যবধানে ২০০ টাকার পেঁয়াজ কিনতে কেজি প্রতি অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বাজার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বাড়তে পারে আরো।
রাহুল রাজ, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশের শীর্ষ জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম চুয়াডাঙ্গা। তা স্বত্ত্বেও ঠিক এ জেলাতেই পেঁয়াজের ঝাঁঝ সবচাইতে বেশী। ফলে সবশ্রেনীর ভোক্তাদের মধ্যে নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ পেঁয়াজ কিনতে এসে ফিরছেন খালি হাতে। আগে বাজারের সব কেনাকাটা শেষে পেঁয়াজ কেনার রীতি ছিল ক্রেতাদের মধ্যে। এখন হিসাব করে প্রথমেই পেঁয়াজ কেনার কাজ সেরে নিতে হচ্ছে। গৃহীনিরা বলছেন তরকারীতে পেঁয়াজের মাত্রা কমিয়ে কোনো রকমে রান্না সারছেন তারা। পেঁয়াজ বিক্রিতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে, আড়ৎদাররা বলছেন যেমন কিনছি তেমন বিক্রি করছি।গত কয়েক মাস ধরে সারা দেশের মত পেঁয়াজ উৎপাদনের জেলা চুয়াডাঙ্গার বাজারগুলিতে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০/১২০ টাকার পেঁয়াজ আজ শুক্রবারের বাজারে হঠাৎ বিক্রি হচ্ছে ২৫০/২৬০ টাকা কেজি দরে। রাত পোহাতে না পোহাতেই পেঁয়াজের এমন দাম বৃদ্ধিতে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত আয়ের ক্রেতাদেরকে রীতিমত বড় ধরণের হোঁচট খেতে হচ্ছে। অনেকে বাজারে এসে পেঁয়াজ না কিনেও বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন। তবে উচ্চ আয়ের মানুষেরা যে বেশি বেশি পেঁয়াজ কিনছেন তা কিন্তু নয়, তারা এখন চাহিদা মতো কেনাকাটায় বিশ্বাসী হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল থেকে সারা শহর জুড়ে সকলের মুখে একই কথা- ‘সরকার কি সামান্য মসলার বাজারটাও নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না। যেখানে উঠতি মৌসুমে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০ টাকা থেকে সর্বশেষ ৩০ থেকে ৪০ টাকা হয়। কিন্ত গত কয়েকমাস ধরে পেঁয়াজের আকাশচুম্বী মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এর শেষ কোথায়।’বাজারে আসা ক্রেতা ‘দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো আর পেয়াজ কিনতে পারছি না। তাই তরকারীতে পেঁয়াজ খাওয়ার মাত্র কমিয়ে দিয়েছি।’ বাজার ঘুরে আরো দেখা যায়, শুধু পেঁয়াজ নয় দাম বেড়েছে শুকনা ঝাল ও রসুনেরও। ১৬০ টাকার শুকনা ঝাল দাম বেড়ে হয়েছে ৩০০ টাকা ও ৬০ টাকার রসুনের মূল্য বেড়ে দাড়িয়েছে ১৮০ টাকায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফী মো. রফিকুজ্জামান বলেন, চুয়াডাঙ্গা গত বছর সুখসাগর জাতের দেশী পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ৬৩০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে ১৯ মেট্রিকটন হারে যেখান থেকে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। যা এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়। চলতি বছরেও সমপরিমান জমিতে পেঁয়াজ আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবারও পেঁয়াজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।