শামসুজ্জোহা পলাশ, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি :
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে অর্থশালী কৃষক দম্পত্তি ইয়ার মোল্লা (৫৫) ও তার স্ত্রী রোজিনা খাতুনকে (৪৫) জবাই করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ রোববার (০৪ অক্টোবর) সন্ধায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কৃষক দম্পত্তির লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, সিনয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আবু রাসেল, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেকসহ পুলিশর একাধিক কর্মকর্তা।
নিহতরা হলেন, উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মোল্লা পাড়ার হিবাত মোল্লার ছেলে ইয়ার মোল্লা ও ছেলের স্ত্রী রোজিনা খাতুন।
সংবাদটি এলাকায় জানাজানি হলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ কৃষক দম্পত্তি লাশ দেখতে ভীড় জমায়।
এলাকাবাসীর ধারণা শনিবার (০৩ অক্টোবর) দিনগত রাতের কোন এক সময় সুযোগ বুঝে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা কৃষক দম্পত্তির ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছে। তবে ঘন জনবসতি এলাকায় রাতে কৃষক দম্পত্তিকে জবাই করে হত্যা করা হলেও প্রতিবেশীরা কেউ কিছু জানতে বা বুঝতে পারেনি এটা সকলের কাছে অবিশ্বাস্ব মনে হচ্ছে। এলাকাবাসী আরও ধারণা করে বলেন, প্রতিবেশীরা কেউ না কেউ কৃষক দম্পত্তিকে হত্যার বিষয়টি জানলে বা দেখলেও হত্যাকারীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না।
নিহত কৃষক দম্পত্তির ছোট মেয়ে ইতি খাতুন জানান, রোববার সন্ধা ৬ টার দিকে শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি বেড়াতে আসি। এসময় বাড়িতে আব্বা মা কাউকে না দেখে ভেবেছিলার প্রতিবেশী কারও বাড়িতে গল্প করছে। এই ভেবে আমি ঘরে ঢোকার জন্য দরজা খুলে দেখি খাটের উপর আব্বার ও মাটিতে (মেঝেতে) মায়ের জবাই করা হত্যা করা রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। চোখের সামনে আব্বা মায়ের জবাই করা রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে আমি চিৎকার করে কাদতে (কান্না কাটি) থাকলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। নিহত কৃষক দম্পত্তির মেয়েসহ প্রতিবেশীদের ধারণা শনিবার দিনগত রাতে কে বা কারা এই কৃষক দম্পত্তির বিপুল পরিমান সম্পত্তির কারণেই পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে।
ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কৃষক দম্পত্তি হত্যার পিছনে প্রকৃত কি কারণ আছে তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে এসন হত্যা কান্ডের পিছনে দুটি কারণ থাকে। একটি পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিশোধ হিসেবে, আরেকটি হলো অর্থ সম্পদ হাতানোর জন্য। আমরাও এ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি খুব শিগগিরি হত্যার কারণ উদ্ধারসহ খুনিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ।