নিউজ ডেস্ক:
পূর্বশত্রুতার জের ধরে চুয়াডাঙ্গার খাড়াগোদায় আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন গুরুতর আহত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা লিটনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা বাজারে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মধ্যে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে মেতে ওঠে। এতে উভয় গ্রুপের প্রায় ০৬ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানায়, চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সাথে একই ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি রাশেদুজ্জামান পলাশের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জের ধরে ইতিপূর্বেও দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফায় হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। একে অপরের নামে মামলা পাল্টা মামলার ঘটনাও আছে
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন পূর্বে গড়াইটুপি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাশেদুজ্জামান পলাশের বোন জুঁই গোষ্টবিহার গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী মুকুলের সাথে অজানা উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। দীর্ঘ দুই বছর প্রেম করে গোপনে বিয়ে করে মুকুল ও জুই। গত ১ মাস আগে পলাশ তার বোনকে জোর করে গোপালপুরে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর জুঁইকে তার খালার বাড়ি খালিশপুরে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে মুকুল ও জুই অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।
বিরোধের এ জের ধরে শুক্রবার বেলা ১টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলামের কর্মী লিটন ও যুবলীগ নেতা রাশেদুজ্জামান পলাশের সমর্থক রকির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও হাতাহাতি হয়।
৩নং ওয়ার্ড সভাপতি রকি লিটনকে ডেকে নিয়ে হালকা চড় থাপ্পড় দিলে শুরু হয় সংঘর্ষের মহড়া। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে খাড়াগোদা বাজারে জাহিদুল ইসলামের নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাশেদুজ্জামানের ওপর হামলা করে। এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় হামলা পাল্টা হামলায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ০৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়। গোষ্টবিহার গ্রামের রসূলের ছেলে হাবিবুর এবং গোষ্টবিহার গ্রামের তাহাজদ্দীনের ছেলে আ,লীগ নেতা লিটন, ছয়বদির ছেলে আহাদ আলী, রিয়াজদ্দীনের ছেলে ঝন্টু, বুড়োর ছেলে আদম গুরুতর রক্তাত্ব অবস্থায় আহত হয়।এদের মধ্যে গড়াইটুপি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ঝন্টু মন্ডল ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লিটন আলীর অবস্থা গুরুতর। তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নবগঠিত গড়াইটূপি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, পলাশের ইন্ধনেই আমার কর্মী লিটনের ওপর হামলা চালানো হয়। বিকালে আমরা কয়েকজন বিষয়টি জানতে গেলে তারাই সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার পক্ষের চারজন আহত হয়েছে।
এ ব্যাপারে যুবলীগ সভাপতি রাশেদুজ্জামান পলাশের অভিযোগ, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ও শুকুর আলীর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাকিল আর সালাম বলেন, আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। লিটন নামের একজনের বাম হাত ও বাম পায়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ার কারনে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করি। তবে আহত ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহব্বুর রহমান সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংঘর্ষের পরই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুই পক্ষই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।