আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস। আর সকাল ১০টায় ছেড়েছে ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস। এ ছাড়া চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী সাগরিকা কমিউটার ছেড়ে গেছে সকাল ৮টায়।
এর আগের দিন গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকাগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস এবং রাত পৌনে ১২টায় ঢাকাগামী ঢাকা মেইল ছেড়েছিল। আর ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে রাতে ছেড়ে আসা দুটি ট্রেন সকালে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত দুটি রেললাইন রয়েছে। এবারের বন্যায় ফাজিলপুর থেকে ফেনী পর্যন্ত একটি রেললাইনের প্রায় সাত কিলোমিটার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার স্রোতে অন্তত ৪০টি স্থানে পাথর, বালু, মাটি সরে গিয়ে রেললাইন ঝুলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এই রেললাইন সংস্কার করতে অন্তত ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে রেলওয়ের। এই অবস্থায় অন্য লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (চট্টগ্রাম) মো. আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে দুটি লেন আছে। এবারের বন্যায় পানিতে রেললাইন ডুবে যায়। তবে পানির স্রোতে একটি লেন (চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী লেন) বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যটি (ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী ডাউন লেন) তুলনামূলক কম। এখন এটি সংস্কার করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। এই লেন দিয়ে ২০ কিলোমিটার গতিতে (স্বাভাবিক গতি ৬৫ থেকে ৭৫ কিলোমিটার) ট্রেন চলাচল করছে। এখনো পর্যন্ত ট্রেন চলাচলে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।
এদিকে চার দিন পর চলাচল শুরু হলেও প্রতিটি ট্রেনে পরিপূর্ণ যাত্রী ছিল বলে জানান রেলওয়ের চট্টগ্রাম স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়ছে। সকালে তিনটি ট্রেন গেছে। প্রতিটি ট্রেনের সব আসন পূর্ণ ছিল। বিকেলে আরও চারটি ট্রেন যাবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে নিয়মিত ১০টি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-ভূঞাপুর, চট্টগ্রাম-নাজিরহাট, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করে।
গত বুধবার থেকে কুমিল্লা ও ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এ সময় ফেনীতে রেললাইন ডুবে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন মানুষ। কেননা, বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন অংশও তলিয়ে গিয়েছিল। এতে যান চলাচল কার্যত থমকে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট সৃষ্টি হয় মহাসড়কে। ট্রেন বন্ধ এবং সড়কপথে যানজটের কারণে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।