বিপ্লব নাথ (চট্টগ্রাম) : দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে রায় হলো ২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম আদালতের দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এবং মহানগর হাকিম আকরাম হোসেনের এজলাসে জেএমবির জঙ্গিরা আত্মঘাতী হামলা চালায়। অবশেষে চট্টগ্রাম আদালতে দুই বিচারকের এজলাসে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির জঙ্গিদের বোমা হামলার ঘটনায় তিন জঙ্গিকে সাত বছর করে ১৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম সাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া পৃথক দুটি মামলায় এই রায় দেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তিন জঙ্গি হলেন, জেএমবি চট্টগ্রামের সাবেক কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ওরফে মোহাম্মদ, শাহাদাত আলী ও জেএমবির বোমা তৈরির কারিগর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজান।
এদের মধ্যে জাবেদ ইকবাল ও শাহাদাত আলী কারাগারে থাকলেও পলাতক রয়েছে জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজান। বোমা মিজানকে সাড়ে তিন বছর আগে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় অন্য জঙ্গিরা। এরপর তাকে আর গ্রেপ্তার করা যায়নি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম আদালতের দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এবং মহানগর হাকিম আকরাম হোসেনের এজলাসে জেএমবির জঙ্গিরা আত্মঘাতী হামলা চালায়। তবে বোমা দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সরকারি কৌঁসুলি সাইফুন নাহার বলেন, দুই মামলায় তিন জঙ্গিকে সাত বছর করে ১৪ বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার সাক্ষী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মানিক দত্ত জানান, সেদিন বিচারক আকরাম হোসেনের আদালতে তিনিও ছিলেন। ছুড়ে মারা বোমাটি তার মাথার ওপর দিয়ে বিচারকের টেবিলের ওপর পড়ে। বোমাটি বিস্ফোরিত হলে এজলাসে থাকা কেউ বাঁচত না।
রায় ঘোষণার আগে দুই জঙ্গিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে কড়া নিরাপত্তার মাধ্যমে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে হাজিরা দেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ আদালতে নেওয়ার পথে ত্রিশাল এলাকায় প্রিজন ভ্যানে গুলি ও বোমাবর্ষণ করে বোমা মিজানসহ আরও দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই সময় এক পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনা ঘটে।