নিউজ ডেস্ক:
দেখতে কচু শাকের মতো। অনেকে বলেন পাহাড়ি কচু। কিন্তু তার নাম ‘ঘনডুগি’। এতে রয়েছে সুঘ্রাণ। রয়েছে পুষ্টি। এটিও একটি সবজি। সেই মান্দাতার আমল থেকে পাহাড়ের মাটিতে সবজিটির ভাল ফলন হচ্ছিল।
একশ্রেণির লোকেরা পাহাড়ি এলাকা থেকে এই ‘ঘনডুগি’ সংগ্রহ করে স্থানীয় হাট-বাজারে নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। বর্তমানে এই ডুগি তেমন আর চোখে পড়ে না। যদিও এ ডুগির তরকারী খেতে স্বাদই আলাদা। ঘনডুগির তরকারিতে শিমের বিচি আর শুঁটকির সঙ্গে মাছের রান্না খুবই সুস্বাদু।
সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা জানায়, হবিগঞ্জ জেলার পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন টিলার মধ্যে ঘনডুগি প্রাকৃতিকভাবেই জন্মায়। অবাধে পাহাড়ি এলাকায় লোকজনের বিচরণ ও টিলা কেটে বালু উত্তোলনের কারণে এসব বনাঞ্চল থেকে ঘনডুগিই শুধু নয়, হারিয়ে যাচ্ছে অনেক কিছুই। বর্তমানে পাহাড়ি এলাকা থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পথে ঘনডুগি। পরিবেশপ্রেমিকরা এতে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সাতছড়ি উদ্যান এলাকায় দেখা হয় ঘনডুগি বিক্রেতা সবুজ মিয়ার সঙ্গে। পুরোদিন ব্যয় করে ঘনডুগি সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য এনেছেন। তিনি জানান, ৮/১০ বছর আগেও পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর ঘনডুগি পাওয়া যেত। এখন সে রকম উৎপাদন নেই। এভাবে চললে ঘনডুগি আর বিক্রি করা সম্ভব হবে না।
এ ব্যাপারে সাতছড়ি বন্যপ্রাণি ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, শুনেছি এক সময় এখানে প্রচুর পরিমাণে ঘনডুগি পাওয়া যেত। বর্তমানে সে রকম পাওয়া যাচ্ছে না। তার মতে, পুরো বছর ছড়ায় পানি না থাকাই এর কারণ। পানি থাকাকালে ছড়ার পাড়ে ঘনডুগি বেশি পাওয়া যেতো।
সাতছড়ি উদ্যানের হেডম্যান চিত্তরঞ্জন দেববর্মার অভিমত, এখানকার বাসিন্দাদের প্রিয় এই খাদ্যটি এখন বিলুপ্তির পথে। এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। রান্না করে খেলে নাকি বিভিন্ন রোগবালাই থেকেও নিরাময় পাওয়া সম্ভব।
স্থানীয় চিকিৎসক ডা. এমএ মোতালিব জানালেন, পাহাড়ি ঘনডুগি খেতে সুস্বাদু। রয়েছে পুষ্টি। খেলে রক্ত পরিস্কার হয়। তার মতে, ঘনডুগি রক্ষায় সবার এগিয়ে আসা উচিত। পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করা উচিত।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান জানান, যুগ যুগ ধরে ঘনডুগি পাহাড়ের টিলা আর ছড়ার পাড়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিচ্ছে। এর চাষাবাদ করলে চাষিরা উপকৃত হবেন।