নিউজ ডেস্ক:
আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শোরুম থেকে জব্দ করা সোনা গ্রাহকদের বুঝিয়ে দিতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। গতকাল মঙ্গলবার যুগ্ম কমিশনার সাফিউর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যদের ওই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক মো. জাকির হোসেন ও উপ-পরিচালক এস এম শরিফুল হাসান এবং বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) একজন ও আপন জুয়েলার্সের একজন প্রতিনিধি।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আপন জুয়েলার্সে বিভিন্ন সময়ে অর্ডার ও বুকিং দিয়েছেন এমন ৩৮৯ জনের তালিকা রয়েছে আমাদের কাছে। এর মধ্যে ৮৫ জনকে সোনা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের সোনা বুঝিয়ে দিতে ওই কমিটি করা হয়েছে। কমিটি গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
এর আগে গত ৪ জুন আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে মোট ১৫.১৩ মণ সোনা, ৭৩৬৯ পিস ডায়মন্ডখচিত অলঙ্কার, নগদ ৬৭.৪০ লাখ টাকা ও ১০০ মার্কিন ডলার জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়। এর পরেই খুলে দেওয়া হয় আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম।
গত ১৩-১৪ মে চোরাচালানের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও অনুসন্ধানের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে বিপুল সোনা ও হীরা সাময়িকভাবে আটক করে শোরুমগুলোতে আইনানুগ জিম্মায় দেওয়া হয়। এরপর তিনবার সময় ও সুযোগ দেওয়ার পরও আপন জুয়েলার্স মালিকরা এসব মূল্যবান সামগ্রীর বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি।
শুল্ক গোয়েন্দা কাগজপত্র যাচাইয়ে কোনো বৈধতা না পেয়ে শোরুমের সোনা ও হীরা জব্দের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকে সোনা ও হীরা হস্তান্তরের পর শোরুমগুলো আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
গত ২৯ মে শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচটি দল আপন জুয়েলার্সের গুলশানের দুটি শাখা, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ারের শাখায় উপস্থিত হয়ে ৮৫ গ্রাহকদের অলঙ্কার হস্থান্তর করেন। এর মধ্যে আপন জুয়েলার্সের উত্তরা শাখায় ১৫ জন, সুবাস্তু ইমাম শাখায় ১৩ জন, গুলশান ডিসিসি মার্কেট শাখায় ১৫ জন, মৌচাক শাখায় ১৯ জন ও সীমান্ত স্কয়ার শাখায় ২৩ জনসহ মোট ৮৫ জন গ্রাহক প্রামাণ্য দলিল প্রদর্শন করে গচ্ছিত স্বর্ণালঙ্কার ফেরত নেয়। অবশিষ্ট গ্রাহক নথিপত্রসহ উপস্থিত না হওয়ায় তাদের অলঙ্কার ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ আছে, গত ২৮ মার্চ দ্য রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ। ৬ মে রাতে ভুক্তভোগীদের একজন বনানী থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এরপরই শুল্ক গোয়েন্দা আপন জুয়েলার্সের অবৈধ অলঙ্কার জব্দ করতে অভিযানে নামে।