নিউজ ডেস্ক:মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পোড়াপাড়া থেকে স্বামী দাউদ হোসেন ও স্ত্রী সাহেদা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী দাউদ হোসেন আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি হত্যা, না আত্মহত্যা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে পুলিশের। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘটন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান জানান, গতকাল বিকেলে বৃষ্টির সময় দাউদ হোসেনের বাড়ির অদূরে আমজাদ হোসেনের ইটভাটার পেছনে একটি ভাটামগাছে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দাউদ হোসেনকে দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। তাঁকে উদ্ধার করে আলমসাধুযোগে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথের মধ্যে তিনি মারা গেছেন বুঝতে পেরে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়। এ দিকে দাউদ হোসেনের ছেলের বউ মমতাজ খাতুন ঘরে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, শ্বশুর দাউদ হোসেনের শোবার ঘরের খাটে তাঁর শাশুড়ি সাহেদা খাতুনের মরদেহ পড়ে আছে। পরে লোকজন গাংনী থানার পুলিশকে ঘটনাটি জানালে পুলিশ মরদেহ দুটি হেফাজতে নেয়। ওসি আরও জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করা হলেও প্রকৃত অর্থে লাশের ময়নাতদন্তের রির্পোট ছাড়া কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না।
নিহত দাউদ হোসেন ও সাহেদা খাতুনের ছেলের বউ মমতাজ খাতুন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আমার শ্বশুর ও শাশুড়ির মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। আমরা পারিবারিকভাবে আপোষ-মীমাংসার চেষ্টা করছিলাম। গত শুক্রবার রাতে আমি তাঁদের মধ্যে মিল করে দিয়ে খাবার-দাবার এক সঙ্গে খাইয়ে যাই। শনিবার বিকেলে আমি বাড়িতে গিয়ে দেখি, শোবার বেডে শাশুড়ির লাশ পড়ে আছে। প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি। ডেকে ডেকে সাড়া না মেলায় পরে বুঝলাম, সে মারা গেছে।’
ধানখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখেরুজামান জানান, আশা সমিতির কাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ঋণ নেওয়া আছে, তা ছাড়াও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকার ঋণ ছিল তাঁদের। সে টাকা পরিশোধ ও সংসারের খরচ জোগানো নিয়ে তাঁদের পরিবারে ঝগড়া-বিবাদ চলছিল। তারই একটি পর্যায়ে ঘটেছে এ ঘটনা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘অভাব-অনটনে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। কয়েক দিনের এ কলহ হতে পারে তাঁদের জীবনহানির ঘটনা। তবে আমরা পরবর্তীতে জানতে পারব, এটি আসলে আত্মহত্যা, নাকি হত্যাকা-।’