রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে আসায় কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে ছয় ইঞ্চি খুলে দেওয়া হয়েছে আজ। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খুলে দেওয়া হয় জলকপাটগুলো। এর ফলে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে জোয়ারের সময় আশপাশ এলাকায় কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানি লোকালয়ে ডুকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের এক জরুরি বার্তায় জানান, কাপ্তাই লেকের উজান এবং ভাটি এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য লেকের ১৬টি স্পিলওয়ে ছয় ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে প্রতি সেকেন্ডে নয় হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হবে। তাই কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট সচল রাখার জন্য প্রতিনিয়ত ৩২ হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে।
এর আগে শনিবার রাত ১০টায় কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেট খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রত্যাশিত পানি না হওয়ায় পরে খোলা হয়নি। আজ রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে গেটগুলা খোলা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন, কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের।
শনিবার রাতে এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কখন খোলা হবে তা গণমাধ্যমকে পরে জানানো হবে।
এর আগে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর বিপদসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় কাপ্তাই বাঁধের স্পিলওয়ে শনিবার রাত ১০টায় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শনিবার বিকেলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছিল। তবে এতে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৭ দশমিক ৬৬ এমএসএল (মীনস সী লেভেল) রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিপদসীমার কাছাকাছি হওয়ায় হ্রদের উজান ও ভাটি এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে পানি নিষ্কাশনের জন্য শনিবার রাত ১০টায় স্পিলওয়ের ১৬টি গেইটের ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু প্রত্যাশিত পানি না হওয়ায় রাতে গেট খোলা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে হ্রদের ইনফ্লো ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইনফ্লো বেশি হলে অর্থাৎ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে স্পিলওয়ের গেটের খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৫টি ইউনিটের সবগুলো দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে ফলে প্রতি সেকেণ্ডে ৩২ হাজার কিউবিক ফিট পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে।
হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান বলেন, কাপ্তাই হ্রদে পানি বর্তমানে বিপদসীমায় পৌঁছেছে। বাঁধের ঝুঁকি এড়াতে এবং রুলকার্ভ অনুসরণ করে হ্রদের পানি ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিবছর এভাবেই পানি ছাড়া হয়। তাই আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন।