করোনা উপসর্গ নিয়ে স্কুলশিক্ষকসহ দুজনের মৃত্যু
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬ শ ছাড়াল। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে ২৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদিকে, জেলার দুই উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে স্কুলশিক্ষকসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রেরণকৃত ৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৮টি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। বাকি সব নেগেটিভ। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গায় ৫টি ফলোআপ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় মোট আক্রান্তের সঁংখ্যা দাঁড়াল ৬০৭ জনে। করোনা উপসর্গে মৃত দুজন হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড় একালার বাসিন্দা কাসেদ আলী মোল্লা (৭০) ও জীবননগর উপজেলার তারিনীবাস গ্রামের স্কুলশিক্ষক নুরুল ইসলাম (৬০)।
জানা গেছে, মৃত কাসেদ আলী মোল্লা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড় গ্রামের সরদারপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর পরিবারের এক সদস্যদের করোনা পজিটিভ হওয়ায় তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন কাসেদ আলী মোল্লা। তবে তাঁর করোনা উপসর্গ ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। অপর দিকে, করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া স্কুলশিক্ষক নুরুল ইসলাম জীবননগর উপজেলার তারিনীবাস গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নের তারিনীবাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকদিন যাবৎ ঠান্ডা-জ্বরে ভুগছিলেন। গত বুধবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দ্রুত যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন সকাল ৯টার দিকে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি জীবননগর উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে উপজেলা প্রশাসন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাশের দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করে। উল্লেখ্য, তিনি ২০২১ সালের মার্চ মাসের দিকে অবসরে যেতেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হলেন ২৯৭জন। ২৪ ঘণ্টায় নতুন নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে ৬০টি। মোট নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৪৩টি। বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছেন ৫৯ জন ও হোম আইসোলেশনে আছেন ২১১ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৩২ জন ও হোম কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ৪৮ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
এদিকে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের প্রদত্ত তথ্যমতে, পিসিআর ল্যাবে গতকাল মোট ৩৭৬টি নমুনায় কুষ্টিয়া ৮০, চুয়াডাঙ্গা ৮৯, ঝিনাইদহ ১০০, নড়াইল ৮১ ও মেহেরপুর ২৬টির মধ্যে কুষ্টিয়ায় ১৬ জন, চুয়াডাঙ্গায় ২৮ জন, ঝিনাইদহে ৪৩ জন, নড়াইলে ৩৪ জন, পাবনায় ৩ জন ও মেহেরপুর জেলার ৮ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা জেলার ৫ জন ও নড়াইল জেলার ১ জনের ফলোআপ রিপোর্ট পজিটিভ। বাকিগুলোর ফলাফল নেগেটিভ।