‘আমরাও কৃষকের সন্তান, তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি -ডিসি গোপাল চন্দ্র দাস
নিউজ ডেস্ক:এমনিতে ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষক, তার ওপর শ্রমিক সংকট। শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি মজুরি বেশি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। সব মিলিয়ে বেশ দুঃসময় যাচ্ছে কৃষকদের। এমন সংকটময় সময়ে ‘কৃষকরা একা নয় আমরা আছি তাদের পাশে’ এ স্লোগান নিয়ে প্রান্তিক কৃষকদের ধান কেটে দেওয়ার কার্যক্রম নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস, সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের পেয়ারাতলা ও মনোহরপুর গ্রামের মাঠে ধান কাটা ও ক্রয় করা হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খোন্দকার ফরহাদ আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াহ্ ইয়া খাঁন, উপজেলা চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আ. সালাম ঈশা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েসা সুলতানা লাকী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আ. খালেক, মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খাঁন, গয়েশপুর স্কাউটের সদস্যসহ স্থানীয় কৃষকদের সাথে অতিথিরা ধান কাটায় অংশ নেন। এরপর কৃষকদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে ১ হাজার ৪০টাকা দরে ২০জন কৃষকের কাছ থেকে ১০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়।
ধান ক্ষেতের মালিক জেবুনেছা জানান, ‘১৫ কাঠা জমির ধান শ্রমিকের অভাবে ক্ষেতেই ঝরে যাচ্ছিল। এজন্য সকালে ছেলে শাহ আলমকে নিয়ে নিজেই ধান কাটতে শুরু করি। হঠাৎ করেই জেলা প্রশাসকসহ সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা এসে জমির ধান কেটে দেন।’
জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরাও কৃষকের সন্তান, কৃষকদের এই দুঃসময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেদেরও সৌভাগ্যবান মনে করছি। কৃষকরা সাময়িক শ্রমিক সংকটে পড়েছে, হয়তো সেটা কেটে যাবে। এছাড়া ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর মধ্যে দিয়ে কৃষকের উৎপাদিত ধানের দাম বাড়ার পাশাপাশি তারা ন্যায্যমূল্য পাবে বলে আশা করছি। কৃষকদের বাঁচাতে আমরা সকল কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান ক্রয় করবো।’
চলতি বছরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় বোরো ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৮৪ মেট্রিক টন। এরমধ্যে জীবননগর উপজেলায় ৪৪০ জন কৃষকদের কাছ থেকে ৩০৮ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই আলোকে মঙ্গলবার ২০জন কৃষকের কাছ থেকে প্রায় ১০ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়।
অনেক কৃষক ধান বিক্রয়ের আশায় ধান বের করে রাখলেও ধান বিক্রি করতে না পেরে, বিক্রি না হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সল্প সময়ে অল্প কিছু কৃষকের কাছে থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে। তবে তালিকাভূক্ত ধান সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তালিকাভুক্ত কৃষকদের নিকট থেকে ধান সংগ্রহ করা হবে।