কয়রাডাঙ্গা নূরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার আরেক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গায় এক মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুল মুমিনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল গত সোমবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা সদরপুর গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুল মুমিন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার বেড় গ্রামের হাজি আমিনুল ইসলামের ছেলে। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ।
চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানায়, ২০১৮ সালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকন্দবাড়িয়া কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন মুফতি আব্দুল মুমিন। চাকরি করার সময় ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রকে জোরপূর্বক বলাৎকার করেন ওই শিক্ষক। ওই সময় ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য ওই ছাত্রকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই ছাত্রটি আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা নূরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত আছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লুৎফুল কবির জানান, প্রায় দেড় বছর আগে বলাৎকারের ঘটনা ঘটলেও প্রাণভয়ে ওই ছাত্র বিষয়টি গোপন রাখে। কিন্তু ২৪ জুলাই আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নূরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় বলাৎকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মাদ্রাসাছাত্র আবির হুসাইনকে মাথা কেটে হত্যার ঘটনার পর পরিবারের সদস্যদের কাছে মুখ খোলে নির্যাতিত ওই ছাত্র। ওই ছাত্রটি যখন বলাৎকারের শিকার হয়, তখন সে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকন্দবাড়িয়া কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। এ বিষয়ে ওই ছাত্রের চাচা গত সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা করেন।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ জানান, বলাৎকারের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। গত সোমবার দিনভর জেলার বিভিন্ন স্থানসহ মেহেরপুরের গাংনী এলাকায় অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে গোপনে খবর পেয়ে সোমবার দিবাগত রাতে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ইবনে খালিদ, ওহিদুল ইসলাম ও রাজীব হাসান ফোর্স নিয়ে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা সদরপুর এলাকা থেকে হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুল মুমিনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারের পর অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ, বলাৎকারের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্র ২০১৮ সালে সদর উপজেলার আকন্দবাড়িয়া কওমি দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র থাকলেও বর্তমানে সে আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা নূরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত আছে।