নিউজ ডেস্ক:
কুষ্টিয়ায় কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে। এক সময় এ এলাকার কৃষকরা ব্যাপক আখ চাষ করত। দাম না পাওয়ায় আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তারা।
কুষ্টিয়ার সুগার মিল সুত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ মাড়াই মৌসুমে মাত্র ৩৯ হাজার ৭৯৭ মেট্রিক টন আখ মাড়াই থেকে ২ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়। চলতি মৌসুমে ৭০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা দিয়ে চিনি উৎপাদন হবে ৪ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন।
দৌলতপুর উপজেলার আংদিয়া গ্রামের আখ চাষি রমজান আলী বলেন, তিনি আগে আখ চাষ করতেন। আখ ফলাতে অনেক সময় লাগায় এতে খরচ অন্য ফসলের তুলনায় অনেক বেশি। তারপরও আখের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তিনি আখ চাষ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন।
আইলচারা গ্রামের আখ চাষি ওসমান গনি বলেন, তিনি ১০-১২ বিঘা জমিতে আখ চাষ করতেন। এখন আর আখ চাষ করেন না।তিনি আরও বলেন, আখ চাষের পর মাড়াই এবং গুড় তৈরি কষ্টসাধ্য এবং তেমন লাভজনক নয়। সরকারিভাবে আখের দাম কম। কর্তৃপক্ষ নগদ অর্থ দিয়ে আখ ক্রয় করে না।
কাতলামারী গ্রামের আখ চাষি জান মোহাম্মদ মণ্ডল বলেন, আখ চাষ করে আগের মতো লাভ হয় না। তাই আখের জমিতে এখন ধান, পাট, পেঁয়াজ, রসুন, মূলা, আলু ইত্যাদি চাষ করেন। এসব চাষে ভালো লাভ হচ্ছে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, এ জেলায় অত্যধিক তামাক চাষ হওয়ায় কৃষকরা আখের পরিবর্তে তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছে। অল্প সময়ে কৃষকরা তামাক চাষ করে অধিক অর্থ আয় করছে।তিনি আরো জানান, কুষ্টিয়ায় আখ চাষ কম হওয়ায় কুষ্টিয়ার জগতি সুগার মিল বন্ধের পথে। আখ চাষের ব্যাপারে যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তবে সুগার মিলের অস্তিত্ব থাকবে না।
কুষ্টিয়া সুগার মিলের এমডি মিজানুর রহমান বলেন, চাষিদের নানান সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। এ বছর আখ উৎপাদন গত কয়েক বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সার, বীজ, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। আখের দাম বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।