নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার এ উপজেলার পৌর এলাকা ও ১১টি ইউনিয়ন মিলে মোট ৯০টি পূজাম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদ্যাপনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত মোট ৪৫৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন। এ ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভিজিলেন্স টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বছর থাকছে কড়া নজরদারি।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি সুনিল কুমার ঘোষ জানান, চলতি বছর এ উপজেলায় মোট ৯০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে পৌরসভাতে ২০টি, সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নে ৩টি, জামাল ইউনিয়নে ৭টি, কোলা ইউনিয়নে ১১টি, নিয়ামতপুর ইউনিয়নে ৮টি, সিমলা রোকনপুর ইউনিয়নে ২টি, ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে ৫টি, রায়গ্রাম ইউনিয়নে ৬টি, মালিয়াট ইউনিয়নে ৫টি, বারবাজার ইউনিয়নে ১১টি, কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে ১১টি, রাখালগাছি ইউনিয়নের ২টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ সাহা জানান, পূজা উপলক্ষে প্রশাসনের প্রস্তুতি সন্তোষজনক।
কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি পূজাম-প কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক শশাঙ্ক কুমার জানান, ম-প এলাকায় নেশা জাতীয় সব মাদকদ্রব্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা খুব প্রসংশিত কাজ। উপজেলার সব কটি এলাকার পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতাদের মাদকের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
দুর্গাপূজার নিরাপত্তার বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুচ আলী জানান, শারদীয়া দুর্গোৎসবে অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ উপজেলাতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যসহ মোট ৪৫৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত আছে। প্রতিটি পূজাম-পে সার্বক্ষণিক পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত আছে। তিনি আরও বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূবর্ণা রানী সাহা জানান, সুষ্ঠুভাবে পূজা উদ্যাপনে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ মাদকদ্রব্য সেবন করে মাতলামি করলে অথবা শৃঙ্খলা নষ্টের পাঁয়তারা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, পাঁচ দিনব্যাপী শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদ্যাপনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে তাঁর কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির হোসেন এখানে তদারকির দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়াও প্রতিটি পূজাম-পে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি সেচ্ছাসেবক দলও দায়িত্ব পালন করবে।