নিউজ ডেস্ক:
মো: হোছেন ওরফে খোকন। করেন কাপড় ও আচারের ব্যবসা। তবে এই ব্যবসার আড়ালে বিক্রি করেন ভয়ঙ্কর মাদক আইস (ক্রিস্টাল মেথ)। দীর্ঘদিন ধরে টেকনাফ দিয়ে এ মাদক এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিতেন। এভাবেই রাতারাতি বনে যান এ ব্যবসার মূলহোতা।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা খোকন ও সহযোগী মোহাম্মদ রফিককে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫ কেজি ৫০ গ্রাম আইস উদ্ধার করা হয়। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ১২ কোটি ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গোলা বারুদ, ২টি মোবাইল ৩টি দেশি/বিদেশি সিমকার্ড এবং মাদক ব্যবসায় ব্যবহৃত ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত মাদক হলো আইস বা ক্রিস্টাল মেথ। ক্রিস্টাল মেথ বা আইসে ইয়াবার মূল উপাদান এমফিটামিনের পরিমাণ থাকে অনেক বেশি। যা মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও বহুগুণ ক্ষতিসাধন করে। এটি সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার জটিলতা এবং মানসিক অবসাদ ও বিষণ্ণতার ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে এটির নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এ মাদকের প্রচলনের ফলে তরুণ-তরুণীদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হয়। এ মাদকে আসক্ত হয়ে মাদকাসক্তরা নানা অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি সময়ে টেকনাফ কেন্দ্রিক কয়েকটি মাদক চক্র পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদকদ্রব্য আইস বাংলাদেশে নিয়ে আসছিল। এমন তথ্যর প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র্যাব। এ চক্রের মূলহোতা ও সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, তারা কয়েক বছর ধরে অবৈধ মাদক ইয়াবার কারবার করে আসছিল। তাদের সিন্ডিকেটে ২০-২৫ জন যুক্ত রয়েছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা সাধারণত নৌ-পথ ব্যবহার করে মাদকের চালান দেশে নিয়ে আসে। চক্রটি বিগত কয়েক মাস ধরে আইস পাচার করে নিয়ে আসছিল। রাজধানীর উত্তরা, বনানী, গুলশান, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তাদের সিন্ডিকেট সদস্য রয়েছে। খোকন এই চক্রের মূলহোতা। সে তার কাপড়/আচারের ব্যবসার আড়ালে মাদকের চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করতো।
খন্দকার মঈন জানান, গ্রেপ্তারকৃত হোছেনের নামে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মোহাম্মদ রফিক এ চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য এবং টেকনাফে অটোরিকশা চালকের ছদ্মবেশে মাদক পরিবহন এবং স্থানান্তর করতো।