নিউজ ডেস্ক:করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে জুন মাসে রপ্তানি আয় তলানিতে নেমেছিল। এরপর জুলাই মাসে তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসে যে পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, রপ্তানি তার চেয়ে বেড়েছে প্রায় ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। খাত সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ ধারণা করছেন, হয়ত এবার করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠল রপ্তানি খাত। তবে এতে খুব একটা আশাবাদী হতে পারছেন না অর্থনীতিবিদ ও রপ্তানিখাতের ব্যবসায়ীরা। তারা আশঙ্কা করছেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় এখন করোনার দ্বিতীয় ধাপ চলে। তাই সেসব দেশ থেকে ক্রয়াদেশ আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। এর প্রভাব পড়বে আরও দুই মাস পর। তাই রপ্তানি খাতের শঙ্কা এখনও কাটেনি। এছাড়া করোনায় দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশে যদি আরও পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তখন পোশাক কারখানা চালু রাখা কঠিন হবে। তখন রপ্তানি খাতেও সংকট তৈরি করবে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি (৩.৯১ বিলিয়ন) ডলার যা গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ছিল ৩৪৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। অর্থাৎ এই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। সাত মাস পর জুলাইয়ে বাংলাদেশ রপ্তানি আয় প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল রপ্তানি আয়ে। এর পর ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি কমছিল। করোনার নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশে লাগতে শুরু করে গত মার্চ মাস থেকে। এতে এপ্রিলে রপ্তানি কমে মাত্র ৫২ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল। এপ্রিল মাসে গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছিল ৮৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বিধিনিষেধ শিথিল করে কলকারখানা চালুর পর মে মাসে রপ্তানি বেড়ে ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। তবে প্রবৃদ্ধি কমেছিল ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রপ্তানি আয় বেড়ে ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলারে উঠলেও প্রবৃদ্ধি কমেছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান, গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এখন যে রপ্তানিগুলো হচ্ছে সেটা মার্চ মাসের ক্রয়াদেশের। এখন মার্চের পর অর্থাৎ করোনার আবির্ভাবের পর যে অর্ডারগুলো এসেছে সেটার ওপর নির্ভর করবে কবে নাগাদ আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে পারব, নাকি পারব না। এখানে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন করোনার সেকেন্ড ওয়েভ চলছে। আমাদের এখানে যখন সেকেন্ড ওয়েভ চলবে, তখন রপ্তানিতে ফের একটা বড় ধাক্কা আসবে। একইভাবে ইউরোপে যদি সেকেন্ড ওয়েভ হয়, তখনও আমাদের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই এখনই কিছু বলা মুশকিল। এটা নির্ভর করবে কোভিড পরিস্থিতির উপর। তাছাড়া আমাদের ইন্টারনাল সমস্যাও আছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্পেন ইতালিতে কোভিডের পর ৮ থেকে ৯ শতাংশ নেগেটিভ গ্রোথ হবে। এমন নেগেটিভ গ্রোথ হলে, সেসব দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খাবে এবং সেসব দেশে বেকার সংখ্যা বাড়বে। তখন তারা খরচ কমানোর দিকে নজর দিবে। এতে আমাদের দেশের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, গত অর্থবছরের যেকোন মাসের চেয়ে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি থেকে বেশি আয় করেছে বাংলাদেশ। করোনার প্রভাব পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগের মাস মার্চে পণ্য রপ্তানি থেকে ২৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। তবে তখন প্রবৃদ্ধি কমেছিল ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি মাসে আয় হয়েছিল ৩৩২ কোটি ২৩ লাখ ডলার। সেই মাসে প্রবৃদ্ধি কমেছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশ। জানুয়ারিতে আয় হয় ৩৬১ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। সেই মাসে প্রবৃদ্ধি কম ছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ। তার আগের মাস ডিসেম্বরে ৩৫২ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় হয়েছিল। প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। নভেম্বর, অক্টোবর এবং সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয় যথাক্রমে ৩০৫ কোটি ৫৮ লাখ, ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ এবং ২৯১ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের পণ্য। ওই তিন মাসেও প্রবৃদ্ধি কমেছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ, ১৯ দশমিক ১৯ এবং ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেন, ‘গত মাসে তো আমাদের রপ্তানি ভালো হয়েছে। বাইরের বিভিন্ন দেশের মার্কেট এখনও খোলেনি। সেসব দেশের মার্কেট খোলার ওপর নির্ভর করবে, আমাদের রপ্তানি খাত আগের জায়গায় কত তাড়াতাড়ি যেতে পারবে। তাই রপ্তানি খাত নিয়ে এখন ভবিষ্যৎবাণী করা যাবে না। এখনও অনেক শঙ্কা রয়েছে।’ বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ আসে তৈরি পোশাক থেকে। গত মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩২৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে পোশাক রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেড়েছে। জুলাইয়ে নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৭৫ কোটি ২ লাখ ডলারের। নিট পোশাকে প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ ও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়েছে। ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৪৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেড়েছে ৪ শতাংশ।
দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি একে আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, বৈশ্বিক ক্রেতারা ক্রয়াদেশ দেয়া শুরু করলেও মূল্য কমে যাচ্ছে প্রায় ১০ শতাংশ। বর্তমানে ৭৫ শতাংশ বুকিং আছে আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর পর্যন্ত। আর নভেম্বর ও ডিসেম্বর পর্যন্ত আছে ৬০ শতাংশ। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি ডেনিম পণ্যের ভালো চাহিদা আছে। তারই প্রতিফলন দেখছি মার্কিন বাজারে। দেশটিতে ডেনিম রপ্তানিতে চীন ও মেক্সিকোকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ডেনিম রপ্তানিতে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল তৃতীয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) আগে থেকেই ডেনিম রপ্তানিতে শীর্ষস্থানে আছে বাংলাদেশ। পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) রপ্তানি কমেছে ১৯ শতাংশ। এক বছরে ওই জোটে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে ৪০০ কোটি ডলারের মতো। এ পরিস্থিতিতে ইইউ-ভিয়েতনাম এফটিএ কার্যকর হওয়া আমাদের জন্য উদ্বেগের। কারণ স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি হিসেবে ২০০১ সাল থেকে ইইউতে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা ভোগ করছে বাংলাদেশ। ফলে ইইউতে রপ্তানি বাণিজ্যে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সংক্রমণ রোধে লকডাউন জারি করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অনেক দেশ। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। তাতে গত মার্চে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতাদেশ আসতে থাকে। সব মিলিয়ে ৩১৮ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়। তাতে মালিকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদ সংবাদকে বলেন, ‘আসলে ক্রয়াদেশ কত শংতাশ ফিরেছে তেমন কোন সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের করা হয়নি। তবে যেসব অর্ডার এপ্রিল মে মাসে হয়েছিল সেগুলো রিসিডিউল করে জুন-জুলাইয়ে এসেছে। জুনে যে পরিমাণ প্রবৃদ্ধি কমেছিল সেটা জুলাইয়ে এসে বেড়েছে। তবে এখনও বলা যাচ্ছে না, আমাদের রপ্তানি কমে নাগাদ স্বাভাবিক পর্যায়ে যাবে। তবে মাস দুয়েক পর জানতে পারব, আমরা কোন জায়গায় আছি।’ এদিকে করোনার পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বব্যাপী সুরক্ষা সরঞ্জামের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পিপিই উৎপাদনে নিজেদের নতুন করে উন্মোচিত করেছে দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশ। এতে রপ্তানি বেড়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোশাক পিপিই’র।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) রপ্তানি হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার ডলারের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে পুরো শরীর আবরিত করার প্লাস্টিক জাতীয় পরিধেয় পোশাক থেকে। দুই ক্যাটাগরিতে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে তৈরি এ পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩২ কোটি ৬২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের। পিপিই রপ্তানির পরের অবস্থানে আছে চিকিৎসা প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম (মেডিকেল প্রটেকটিভ গিয়ার)। চারটি বিশেষ ক্যাটাগরিতে এ খাতে রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারের পণ্য। এ ছাড়া ১ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার ডলারের তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক, ১ কোটি ১৫ লাখ ৮০ হাজার ডলারের অন্য মাস্ক ও সার্জিক্যাল আইটেম এবং ৬৮ লাখ ৪০ হাজার ডলারের মেডিকেল ও সার্জিক্যাল ব্যবহারের সুরক্ষা গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদ বলেন, ‘সুরক্ষা পোশাক সামগ্রীর ক্রয়াদেশ কেউ কেউ পাচ্ছে। কিন্তু এটা দিয়ে রপ্তানির ঘাটতি পূরণ হবে না। এটা নতুন একটা আইটেম। রপ্তানি খাতের জন্য এটা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে পেয়েছি আমরা।’ চামড়া খাত হলো দ্বিতীয় বৃহৎ রপ্তানি আয়ের খাত। তবে এই খাতের খরা কাটছেই না। জুলাইয়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় এসেছে প্রায় ৯ কোটি ডলার। আগের বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমলেও রপ্তানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ। গত অর্থবছর হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৩ কোটি ১৭ ডলার। রপ্তানির এ অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। এ খাতের লক্ষ্য ছিল ৩ কোটি ৪৯ ডলার। আগের অর্থবছর আয় হয় ৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছর রেকর্ড পরিমাণে কমে যায় কৃষি পণ্য রপ্তানি আয়। তবে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে এ খাত। জুলাইয়ে কৃষি পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার।
এদিকে ধারাবাহিক লোকসানের কারণে সম্প্রতি দেশের সব সরকারি পাটকল বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ মহামারীকালে সরকারের এমন উদ্যোগের মধ্যেও আশা দেখাচ্ছে এ খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে পাট রপ্তানিতে। জুলাইয়ে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া ওষুধ রপ্তানিতেও রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি ওষুধ রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এছাড়া পণ্য অনুযায়ী প্রস্তুত করা ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশের স্বাস্থ্য খাতের পণ্য ওষুধ রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ, পাট ও পাটজাত পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ শতাংশের বেশি। সবজি রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৪.৫৩ শতাংশ, চা রপ্তানিতে ১০.৬৪ শতাংশ, কার্পেটে ৮.৪১ শতাংশ আর ছাই রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৪.৫৩ শতাংশ। অর্থাৎ ওষুধ পাট ও কৃষিজাত পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে বেশি।
এ প্রসঙ্গে দেশের ওষুধ খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘করোনায় আমাদের রপ্তানির গতি কিছুটা কমেছিল। তবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছি। করোনার আগে অর্থাৎ স্বাভাবিক পরিস্থিতি যে পরিমান ওষুধ রপ্তানি হতো এখনও চলতি মাসগুলোতেও তেমন রপ্তানি হচ্ছে। তবে আমাদের লোকাল মার্কেট স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। লোকাল বাজারে আমাদের বেচাকেনা অনেকে কমেছে। রপ্তানির বিভিন্ন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দেশের ৭৫০টি পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৬০০ পণ্য বাড়তি সুযোগ পায়। দেশের শ্রমঘন সব শিল্পেরই রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। এ জন্য রপ্তানি সহায়ক নীতি সহায়তা, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা, মান সনদের গ্রহণযোগ্যতা, পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করলে রপ্তানি আরও বাড়বে।