গ্রাম বাংলার মানুষকে আনন্দ দিতে ও গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে
নিউজ ডেস্ক:আধুনিক সভ্যতার এই যুগে দিন দিন কমে যাচ্ছে গরুর গাড়ীর ব্যবহার। কলের লাঙ্গল দখল করে নিচ্ছে গরুর লাঙ্গল। এখন শুধু গোয়াল ঘরে দেখা মেলে গরুর। আর গরুর গাড়ী চোখে পড়ে খুবই কম। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আর নতুন প্রজন্মকে জানান দিতে ঝিনাইদহের বেতাই গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগীতা। প্রতিযোগীতা দেখতে সকাল থেকে দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসে হাজার হাজার মানুষ। উদ্দেশ্যে একটিই, প্রতি বছরের ন্যায় দেখবেন গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগীতা।সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মালিতার আয়োজনে বেতাই গ্রামের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগীতা। এতে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে বাছাই করা মোট ২০টি গরুর গাড়ি এই দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়। এদিকে, দারুণ এ আয়োজন দেখে মুগ্ধ জেলার ক্রীড়াপ্রেমী দর্শকরা। ঝিনাইদহ শহরের মডার্ন মোড় থেকে আসা খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ বলেন, গরুর গাড়ি দৌড় প্রতিযোগীতা যে এতো সুন্দর হতে পারে, তা না দেখলে বুঝতে পারতাম না। দেশের প্রতিটি জেলায় এ ধরণের আয়োজন করা উচিত। ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের অনার্স পড়–য়া ছাত্রী লাইলা পারভীন বলেন, এই প্রথম তিনি গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা দেখছেন। এ দেখে মুগ্ধ তিনি। সাংস্কৃতিক কর্মী সোহেলি আহম্মেদ বলেন, বাংলার এই এতিহ্য বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার জন্য এ আয়োজন প্রতি বছর করা উচিত। এ ব্যাপারে আয়োজক নাসির উদ্দিন মালিতা বলেন, গরুকে গৃহপালিত প্রাণী হিসেবেই আমরা জেনে থাকি। গায়ের মাঠে আবহমান কাল থেকেই কৃষকের হালচাষের অবিচ্ছেদ্যে অংশ এই নিরীহ প্রাণীটি। মানবজীবনের পরতে পরতেও ছড়িয়ে আছে গরুর উপকারিতার কথা। তবে, মাঝে মাঝে এই প্রাণীটি হয়ে ওঠে বিনোদনেরও অংশ। তাই গ্রাম বাংলার সহজ সরল মানুষকে আনন্দ দিতে আর গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এ আয়োজন করা হয়েছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় বেতাই গ্রামের ডালিম কুমারের গরুর গাড়ি। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস, সদর থানার ওসি (তদন্ত) এমদাদুল হক, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খালেদা খানম, সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরনসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।