নিউজ ডেস্ক:
উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ‘বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে পিয়ংইয়ংকে ‘ভয়ভীতি’ দেখানোর বিরুদ্ধেও সতর্ক করেন তিনি। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা স্পুটনিক জানিয়েছে, চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বেল্ট অ্যান্ট রোড শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এক বক্তব্যে পুতিন কোরিয়া উপদ্বীপে চলমান উত্তেজনার শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এটি নিশ্চিত করেই বলতে চাই যে, আমরা পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রসার ঘটার বিরোধী। আমরা এটাকে ক্ষতিকারক এবং বিপজ্জনক বলেই মনে করি। কিন্তু উত্তর কোরিয়াকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করাও প্রহণযোগ্য নয়। এটি বন্ধ করতে হবে এবং সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে হবে।’
রোববার উত্তর কোরিয়া হোয়াসং-১২ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। এটি প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে ৭৮৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে। এ ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘নতুন ধরনের’ বলে জানিয়েছে জাপান। বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার। এটি যুক্তরাষ্ট্রের গুয়াম দ্বীপে আঘাত হানতে সক্ষম। গুয়ামে আছে যুক্তরাষ্ট্রের এন্ডারসন বিমান ঘাঁটি। উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে পিয়ংইয়ং দেখিয়ে দিয়েছে যে, ওয়াশিংটন তাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে কোনো সামরিক ব্যবস্থা নিলে পাল্টা আঘাত হানার মতো শক্তিশালী উপায় তাদেরও আছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা জানিয়ে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুশিয়ারি দিয়েছে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার এক বিবৃতিতে পিয়ংইয়ংয়ের কাছে প্রতিশ্রুতি দাবি করেছে যে, এরপর উত্তর কোরিয়া এ ধরনের আর কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করবে না। বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার ‘তাৎক্ষণিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপের মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্রের নির্মাণ ও উন্নয়ন বন্ধ করার আন্তরিক প্রতিশ্রুতি’ দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার ওপর ছয় ধাপে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদের এ পদক্ষেপের আগে একই দিন উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, রোববার তারা যে ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষা করেছে তা বড় ধরনের পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম নতুন ধরনের একটি ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ‘নতুন করে বানানো ব্যালিস্টিক রকেটের’ পরীক্ষা ছিল বলে দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে উত্তর কোরিয়ার এ দাবি এখনও যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী।