নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গায় পুকুর থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ বালু। কোথাও সরকারি খালের মধ্যে কোথাও পুকুরে আবার কোথাও ফসলি জমির মধ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে তোলা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ বালু। আর এই বালুর অধিকাংশই উত্তোলন করছেন ঠিকাদাররা। সব মিলিয়ে যেন চলছে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের মহাউৎসব। এ বিষয়ে একবারেই নিশ্চুপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বালু মহল এবং মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ওই আইনের (৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লেখ রয়েছে ড্রেজিং কার্যক্রমে বাল্কহেড বা প্রচলিত বলগেট ড্রেজার ব্যবহার করা যাবে না। এবং সর্বোপরি এভাবে বালু উত্তোলন আইনত দ-নীয় অপরাধ বলে বিবেচ্য হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে অবৈধ বালু উত্তোলনে বৈধ কাগজ পাচ্ছে এসব বালু উত্তোলনকারিরা বলে অভিযোগ রয়েছে। আইন অবজ্ঞা করে স্থানীয় প্রভাবশালী ঠিকাদাররা অতি মুনাফার আশায় এমন অনিয়ম করলেও স্থানীয়দের অভিযোগ এবিষয়ে নিশ্চুপ সরকারের সংশ্লিষ্ট তদারককারী প্রতিষ্ঠান। স্থানীয়রা এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ হলেও প্রভাবশালীরা এর সাথে জড়িত থাকায় প্রতিবাদ করতে ভয় পায় সাধারন মানুষ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছী ইউনিয়নের ইসলামপাড়ায় সরকারি জিকে ক্যানেল, বসতবাড়ি ও মাঠের ফসলি জমির পাশে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ বালু। সরকারি আইনে এটা বলা হয়েছে, কোন স্থানে বালু তোলা অনুমতি নেওয়া হলেও লোকালয়ের প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হতে হবে সেই স্থান। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিষেধ করা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জোরপূর্বক ফসলি জমিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ঠিকাদারী কাজের জন্য প্রায় ২ হাজার ট্রাক্টর বালির প্রয়োজনে মাটির তলাদেশ থেকে উত্তোলন করছে একজন বালু ব্যবসায়ী। এভাবে বালু উত্তোলনের কারণ তার নিকট জানতে চাইলে তিনি ঠিকাদারের দিকে আঙ্গুল তোলেন। ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় তার নামে কেউ অভিযোগও করছে না। চুয়াডাঙ্গা জেলার ওয়াটার এন্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাবেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর আলী জানান, এভাবে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াসহ দেখা দিতে পারে ভূমি ধ্বস। এছাড়াও আবাদি জমি দেবে যেতে পারে। যার ফলে দীর্ঘ মেয়াদে পরিবেশের উপর এর একটি কুফল পড়বে। তাই এখনই ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্টদের আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সিমা শারমিন বলেন, আইনত এভাবে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।