নিউজ ডেস্ক: নেপালে ইউএস-বাংলার বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির অবতরণ ঠিক ছিল না বলে দাবি করেছে ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার কাঠমান্ডুতে এক সংবাদ সম্মেলনে ত্রিভুবন বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজকুমার ছত্রী বলেন, আমাদের একজন ভাই প্লেনটিতে ছিলেন। তিনি এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, প্লেনটি বাম্পিং করছিল। এছাড়া কন্ট্রোল প্যানেল এবং অনেকেই আমাকে বলেছে, ইট ওয়াজ নট নরমাল ল্যান্ডিং।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমানটি সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে অবতরণের কথা ছিল। নামার আগেই এটি বিধ্বস্ত হয়ে বিমানবন্দরের পাশের একটি খেলার মাঠে পড়ে যায়। বিমানটিতে চারজন ক্রু ও ৬৭ যাত্রী ছিল। উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হন। আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন বাংলাদেশিসহ ২১ জন।
দুর্ঘটনার পর ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ার ও পাইলটের মধ্যে কথোপকথনের প্রকাশিত অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, প্রথমে কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানটির পাইলটকে বিমানবন্দরের ডানদিকের ২ নম্বর রানওয়েতে অবতরণের কথা বলা হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী, পাইলট বিমানটি বিমানবন্দরের ডানদিকে নিয়ে যান। কিন্তু ডানদিকে রানওয়ে ফ্রি না থাকায় পাইলট আবারও কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি বর্তমান অবস্থানে থাকতে পারবেন? এ সময় পাইলট দুই নম্বর রানওয়ে ফ্রি করার জন্য কন্ট্রোল রুমের কাছে অনুরোধ জানান। কিন্তু তাকে আবারও ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর আবার কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করেন পাইলট। তখন পাইলট বলেন, স্যার আমি আবারও অনুরোধ করছি রানওয়ে ফ্রি করুন। এর কিছুক্ষণ পরই বিমানটি বিকট শব্দে ত্রিভুবন বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে আছড়ে পড়ে।
সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রিভুবন বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজকুমার ছত্রী বলেন, ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ৯০ ভাগ বিমান দক্ষিণ দিক থেকে অবতরণ করে। ইউএস-বাংলাকেও দক্ষিণ দিক থেকে অবতরণ করতে বলা হয়। যখন পাইলট দক্ষিণ থেকে অবতরণ না করে দক্ষিণ পার হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কন্ট্রোলার বলেন- আপনাকে তো ০২ বলেছিলাম, আপনি কেন ২০-তে আসছেন? এটা তো উত্তর। তখন পাইলট বলেছেন, আমরা ২০-ই ব্যবহার করব। তখন কন্ট্রোল প্যানেল থেকে পাইলটকে পূর্বে অপেক্ষা করতে বলা হয়।
ত্রিভুবন বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজারের ভাষ্য, একটা বিষয় হচ্ছে সব সময় শেষ সিদ্ধান্তটা পাইলটের। এবং নির্দেশনা পাইলটের ওপর নির্ভর করে।’
বিমান নিচে নামার পর যদি রানওয়ে বদলাতে বলা হয়, তখন পাইলটের কিছু করার থাকে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ছত্রী বলেন, না কিছু করার থাকে না।
এটিসি টাওয়ারের ত্রুটি ছিল কিনা? জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, সেটা আমরা অস্বীকার করছি না, স্বীকারও করছি না। এ বিষয়ে আমাদের উচ্চপর্যায়ের তদন্তকারী দল কাজ করছে।’