বায়েজীদ (গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি) :
জীবনের অনেক চড়াই উৎরাই পার করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে মাছ চাষ শুরু করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের যুবক শাহ মো. আব্দুল মান্নান সিন্টু। কিন্তু অসময়ের ভয়াবহ বন্যায় তার স্বপ্ন একেবারে ভেঙে চুরমার করে শেষ করে দিয়ে গেল। আজ সে সর্বশান্ত। নাই তার মাছ নাই তার কাছে টাকা। ঋণের দেনায় আপদমস্তক নিমজ্জিত সিন্টু। বেঁচে থাকার স্বপ্নই তার কাছে এখন দুঃস্বপ্ন।
গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকার শাহ পাড়া খলসীর বাসিন্দা শাহ মো. আব্দুল মান্নান সিন্টু। জীবনে ঘাত প্রতিঘাতে জর্জরিত হয়েছেন বারংবার। শেষমেশ জীবন ধারণের তাগিদে শুরু করেন মাছ চাষ। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাইয়াগঞ্জের ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন ৩ একর ৪০ শতকের একটি পুকুর লিজ নেন সিন্টু। ব্যক্তি পর্যায় থেকে ধারদেনা করে শুরু করেন মাছ চাষ। পুকুরে রুই, কাতল, সিলভার, কারফু, ব্রিগেট মাছ ছাড়েন তিনি। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই বিক্রির উপযোগী হতো তার পুকুরের মাছ। আর এমন সময় দেখা দেয় অসময়ের ভয়াবহ বন্যা। বন্যার তোড়ে ভেসে যায় তার পুকুরের সব মাছ।
নদীতে পানি বৃদ্ধির খবর শুনে সিন্টু প্রথমে অপরিনত মাছ বিক্রির চেষ্টা করেন। কিন্তু ক্রেতা না পাওয়া আর বিক্রি করা সম্ভব হয়নি পুকুরের মাছ। পরে তিনি পুকুরের চতুরদিকে মোটা জাল দিয়ে মাছ আটকানোর চেষ্টা করেন। তার সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। বন্যার পানির তীব্র ¯্রােতে তার পুকুরের সব মাছ ভেসে যায়। মাছ ভেসে যাওয়ায় তার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এবিষয়ে শাহ মো. আব্দুল মান্নান সিন্টু জানান, পরিচিতদের কাছ থেকে ধারদেনা করে এবং এনজিও থেকে বিপুল পরিমান ঋণ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। পুকুরের মাছের বৃদ্ধিও ছিল খুব ভালো। আর কয়েকদিন পরেই তার পুকুরের মাছ বিক্রির উপযোগী হতো। কিন্তু ভয়াবহ বন্যায় তার পুকুরের সব মাছ ভেসে গেল। শাহ মো. আব্দুল মান্নান সিন্টু আরও জানান, এখন তিনি সর্বশান্ত। পাওনাদার ও এনজিও এর ঋণ শোধ করার মত তার আর কোন সামর্থ্য নাই। এবারের বন্যায় তার জমির ফসলেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় তার ১০ লক্ষাধিক টাকার মাছ ভেসে গেছে। তিনি আক্ষেপ করে জানান, এখন তিন বেলা খাবার মতও তার সামর্থ্য নাই।