নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গার বিশিষ্ট চিকিৎসক খুলনা আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সাবেক তত্বাবধায়ক ডা. গোলাম মোস্তফার একমাত্র মেয়ে নাসরিন আক্তার হেলেনকে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী খসরুল আলমের বিরদ্ধে। শারীরিকভাবে নির্যাতন ও ২য় বিয়ে করায় ডা. গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করলে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ খসরুল আলম খসরুকে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, ২৫ বছর আগে আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর গ্রামের নজির উদ্দিনের ছেলে খসরু ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে গোলাম মোস্তফার মেয়ে হেলেনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে হেলেনকে তুলে নিয়ে অন্যত্র রেখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। দীর্ঘদিন তাদের সম্পর্ক হেলেনের পিতামাতা মেনে না নিলেও অবশেষে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তাদেরকে ঘরে তুলে নেয়। বর্তমানে তাদের একটি ১৩ বছরের কন্যা সন্তান আছে। বেশ ভালোই কাটছিল তাদের সংসার। হঠাৎ খসরুল আলম ওরফে খসরু তার শশুর ডা. মোস্তফা ক্লিনিকের আয়া আলোর সাথে একবছর ধরে প্রেম সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরই একপর্যায়ে কুষ্টিয়া মাগুরা গ্রামের রফি উদ্দিনের মেয়ে আয়া আলোর সাথে ২য়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে ১ম স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
এ ব্যাপারে প্রথম স্ত্রী হেলেনের পিতা ডা. গোলাম মোস্তফা এ প্রতিবেদককে জানান, আমার জামাই খসরু একজন সামান্য ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি ছিল। তাদের সুখের জন্য আমি এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ লাখ টাকা নানাভাবে তাদের সহায়তা করেছি। তারপরও খসরুল আলম আমার মেয়ের উপর অমানবিক অত্যাচার চালিয়ে গেছে। যখন তখন তার কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করতো, আমার মেয়ে কখনো কখনো আমাকে বলতো, কখনো বলতো না। না বললেই বা টাকা না পেলে হেলেনের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যেতো। সম্প্রতি গত ২ তারিখে আমার মেয়েকে বেশ কিছু গোন্ডা-পান্ডা নিয়ে বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়ে হেলেনকে বেধড়ক মারপিট করে। আমি তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। মেয়ের এই দূর্দশার কারণে আমার স্ত্রী স্ট্রোক করে প্যারালাইসিস হয়ে পড়ে আছে। গত ৬ জানুয়ারী খসরুল আলম চুয়াডাঙ্গা আদালত থেকে আমার মেয়েকে একটি ডিভোর্স লেটার পাঠায়। যা আমার মেয়ে হেলেন গ্রহণ করেনি।
হেলেন জানায়, তার নিজ নামীয় বেশ কিছু সম্পত্তির দলীল খসরুল আলম হাতিয়ে নিয়ে আলমডাঙ্গা ব্র্যাক ব্যাংক থেকে হেলেনের সহি জাল করে ৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করেছে। এই ধরনের একজন প্রতারক, নারী নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই ডা. গোলাম মোস্তফা বাদি হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা থানায় একটি নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করে। মামলার পর আলমডাঙ্গা থানার এসআই লিয়াকত সঙ্গীয় ফোর্সসহ খসরুল আলমকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর খসরু জানায়, আমি বাড়িতে গেলে আমাকে মারধর করে। আজ খসরুকে সংশ্লিষ্ট মামলায় চুয়াডাঙ্গা আদালতে প্রেরণ করা হবে।