ভবন মালিক ও শোরুম ম্যানেজারকে আসামী করে বিভাগীয় মামলা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জ শহরের এসএস রোডে অবস্থিত নির্মাণাধীন ফকির টাওয়ার (বর্তমান মাতাম টাওয়ার) এ ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রী বিক্রেতা ওয়ালটন শোরুমে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার প্রমাণিত হওয়ায় ৩৬ লাখ টাকা জরিমানা করে ভবন মালিক ও শোরুম ম্যানেজারকে আসামী করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। শনিবার বিকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ মামলাটি দায়ের করেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিরাজগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলী।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ শহরের ব্যস্ততম এসএস রোডের ফকির টাওয়ারের স্বত্তাধিকারী ঢাকাস্থ সুতা ব্যবসায়ি হাজী আব্দুস সালামের নির্মাণাধীন ৬তলা ভবনের নিচতলা ভাড়া নেয় ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রী বিক্রেতা ওয়ালটন কোম্পানী। কিন্তু ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও অবৈধ ভাবে দীর্ঘ ২১ মাস ধরে উচ্চ ক্ষমতা সমম্পন্ন ভোল্টেজ ব্যবহারের মাধ্যমে শোরুমটি পরিচালনা করে কর্তৃপক্ষ। গত ৩১ জুলাই বিকালে বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে গিয়ে মিটার টেম্পারিং করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করার সচিত্র প্রমাণ পান এবং সংযোগ বিচ্ছন্ন করেন। পরে তিনি বিভাগীয় মামলার জন্য চেষ্টা করলে তদবিরে অতিষ্ঠ হয়ে এক পর্যায়ে গত শনিবার বিকালে সেখানে পাবনা বিদ্যুৎ আদালতের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে দীর্ঘ ২১ মাসের সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহারের অভিযোগ এনে শোরুম ম্যানেজারকে প্রধান এবং ভবন মালিককে ২য় পক্ষ করে একটি নিয়মিত মামলা করেন। একই সাথে সরকারের ৩৬ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি করা হয়েছে বলে বিদ্যুৎ আইনে ক্ষতি পুরণ পরিশোধের দাবি করা হয়। এদিকে ঘটনাটি ৬দিন অতিবাহিত হলেও সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ওই ভবন মালিক ও শোরুম ম্যানেজারের মধ্যে সিমাবদ্ধ থাকে। ৫ আগষ্ট শনিবার রাতে গণমাধ্যম কর্মিদের নজরে আসে বিষয়টি ফাঁস হয়।
সরেজমিন ফকির টাওয়ারের মালিক আব্দুস সালামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার ভবনের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত ম্যানেজার মিন্টু সেখ জানান, আমরা জানিনা ওয়ালটন কিভাবে সংযোগটি নিয়েছে। তবে নিশ্চই বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারি জড়িত ছাড়া ওই সংযোগ নেয়া সম্ভব না। বিষয়টি নিয়ে সমাধানের জন্য একাধিকবার বৈঠক করেছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না। দেখা যাক কি হয়। তবে ওয়ালটন শোরুমের সিরাজগঞ্জ শাখা ম্যানেজার কোন কথা বলতে রাজি হননি।
অবৈধ সংযোগ নিয়ে সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের তৎকালিন আবাসিক প্রকৌশলী নির্বাহী আবু হেনা মোস্তফা কামালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,আমি প্রায় ১৪মাস পুর্বে বদলী হয়ে এসেছি। সংযোগটির বয়স যেহেতু ২১ মাস সেইহেতু আমার কর্মকালিন সময়েই হবে। কিন্তু আমি বা আমার কোন কর্মচারি করেছে কিনা জানা নেই। তারা অন্যত্র থেকে লোক এনেও সংযোগ নিতে পারে।
অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ কর্তন,সরকারের ক্ষতি সাধন ও মামলা বিষয়ে সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম মহি উদ্দিন বলেন,আমি সংবাদকর্মিদের সাথে এনিয়ে বেশি কথা বলতে পারবোনা। যেহেতু মামলা পর্যায়ে আছে তাই কথা না বলাই ভালো।
এমন বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে আপনার দপ্তরের কেউ জড়িত আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সেটা বলতে পারবো না। তবে কেউ না কেউতো জড়িত আছেই। এসময় তিনি বলেন অনেকেই বিষয়টি মিমাংসার জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখন মামলা হয়েছে। ভবন মালিককে কেন ২য় পক্ষ করে মামলা করলেন এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন,রায় হবার পর মন্তব্য করতে পারবো।#