নিউজ ডেস্ক:
আপনি যদি প্রকৃত সফল মানুষদের সঙ্গে সময় কাটান তাহলে লক্ষ্য করে থাকবেন যে, এমন কিছু কথা আছে যা সাধারণত তারা প্রত্যাখান করেন।
তারা নেতিবাচক চিন্তা বা অজুহাত দেখিয়ে সময় নষ্ট করেন না। তারা মনে করেন আত্ম-সীমাবদ্ধ বিশ্বাস সফলতাকে দূরে ঠেলে দেয়। আর অজুহাত প্রকৃতপক্ষে কোনো সমাধান দেয় না।
মিথ্যা বিশ্বাস থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্তটি মহান উদ্যোক্তাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এটা তাদের এগিয়ে নিয়ে যায় এবং তাদের সফল হতে সাহায্য করে।
আপনিও একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দ্বারা একই ধরনের সাফল্য উপভোগ করতে পারেন। এ প্রতিবেদনে সাতটি জিনিসের একটি তালিকা আছে, যা আপনি কখনোই একজন মহান উদ্যোক্তার মুখ থেকে শুনতে পাবেন না।
১. ‘আমি এটা পারব না’
কখনো কখনো আমরা মনে করি আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা বা সম্পদের অভাব আছে। যদিও এই অনুভূতিতে আমরা প্রলুব্ধ হই কিন্তু সেরা প্রতিষ্ঠাতারা এটি প্রত্যাখ্যান করেন। তারা নিজের সন্দেহ দূরে সরিয়ে দেন এবং তারা যা তৈরি করতে চান তাতে মনোযোগ দেন।
বিশ্বাস করতে শিখুন এবং বলুন- আমি পারি, যদিও আপনার মনে হয় যে আপনি পারবেন না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনি বিশ্বাস করতে শিখবেন যে, আপনার মন যা চায় আপনি তাই করতে পারবেন। যদি প্রমাণ করতে ইচ্ছে হয়, আপনি শৈশবকাল থেকে যা যা অর্জন করেছেন তার একটা তালিকা তৈরি করুন। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে, আপনি জীবনের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবেন।
২. ‘কিভাবে করব আমি জানি না’
আপনি আজ পর্যন্ত যা কিছু করেছেন সবকিছু আপনাকে শিখতে হয়েছিল। আপনি হাঁটতে শিখেছেন, ড্রাইভিং করতে শিখেছেন এবং ব্যবসা কিভাবে শুরু করতে হয় সেটা শিখেছেন। শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। কোনো উদ্যোক্তারই শুরুতে সব উত্তর জানা থাকে না।
যখন আমরা স্কাইবেল ব্যবহার শুরু করি, তখন আমরা জানতাম না যে কীভাবে ভিডিও ডোরবেল তৈরি করা যায়, এমনকি কেউও জানত না। জ্ঞানের অভাব সত্ত্বেও আমরা যদি এগিয়ে না যেতাম তাহলে কোম্পানির অস্তিত্ব থাকত না।
‘আমি কিভাবে করব’ সেটা বলার পরিবর্তে এই মন্ত্রটি মনে রাখবেন যেটা আপনাকে সাহায্য করবে: ‘সমাধান খুঁজে বের কর’। জীবন হচ্ছে রহস্য উন্মোচনের একটি চলমান প্রক্রিয়া।
৩. ‘আমার যথেষ্ট সময় নেই’
সফল প্রতিষ্ঠাতাদের হাতে সময় থাকে না। তারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর জন্য সময় তৈরি করে নেয়। বাক্যটি এক্সচেঞ্জ করুন, বলুন- আমার সময় নেই, তাই আমাকে সময় করে নিতে হবে।
আপনি যদি সময় বের করতে চান, তবে মনে করুন আপনি একজন লোক নিয়োগ করেছেন যে আপনাকে কাজ পরিচালনা করতে সহায়তা করে। আপনার একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট আছে যে আপনার সময়সূচি পরিচালনা করে এবং অন্যান্য কাজগুলো সম্পাদন করা সহজ করে তোলে।
৪. ‘আমার কাছে শেখার সময় নেই’
পৃথিবীর সবচেয়ে সফল ব্যক্তিদের মধ্যে একটি উন্নত মনোভাব রয়েছে। তারা জ্ঞান কামনা করে এবং তারা জানেন যে, এটি সরাসরি সাফল্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
না শেখার জন্য সময়ের অভাব কোনো অজুহাত নয়। পডকাস্ট সাবস্ক্রাইব করুন, আপনি যখন ভ্রমণ করছেন বা দুপুরের খাবার খাচ্ছেন তখন অডিওবক্সগুলো শুনুন।
৫. ‘যদি আমার যথেষ্ট টাকা থাকত তাহলে আমিও সফল হতাম’
সফল উদ্যোক্তারা অর্থায়নকে তাদের সাফল্যের নির্দেশক মনে করে না। এর পরিবর্তে তারা পরিকল্পনা করেন, যে অর্থ আছে তার সৎ ব্যবহার নিশ্চিত করেন। যদি অর্থায়ন কম হয় তারা সৃজনশীলতার পরিচয় দেন। কত কম টাকায় একই ফলাফল আনা যায় সেটা চিন্তা করেন অথবা তারা অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করবেন।
৬. ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা মূর্খ’
অদক্ষ উদ্যোক্তারা প্রায়ই তাদের প্রতিযোগিদের দক্ষতার অবমূল্যায়ন করেন। অপরদিকে সফল প্রতিষ্ঠাতারা তাদের প্রতিযোগীদের সম্মান করেন।
যদি তারা একই সুযোগ শণাক্ত করতে পারে এবং বাজারে একটা প্রতিযোগিতামূলক সমাধান দিতে পারে তবে তারাও আপনার মতো স্মার্ট।
৭. ‘সংস্কৃতিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব’
কোম্পানির সংস্কৃতি (নিয়মকানুন, শৃঙ্খলা) হচ্ছে, ব্যবসার প্রাণশক্তি। এটি আপনার সফলতার নির্ধারক। কোম্পানির সংস্কৃতি কোম্পানিকে তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করে। কর্মচারীদের উৎকর্ষতা সাধনের একটি পরিবেশ তৈরি করে। সাধারণত সফল কোম্পানিগুলোর নিজস্ব নিয়মকানুন থাকে। প্রমাণ চান?
নবীনরা এয়ারবিএনবি, ইন্ডিগোগো এবং আরইআই কোম্পানিগুলোকে লক্ষ্য করুন।
নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে ‘ফিজিক্যাল রিমাইন্ডার’ ব্যবহার করুন। যুক্তরাষ্ট্রের একজন সফল উদ্যোক্তা অ্যান্ড্রু থমাস বলেন, ‘আমি একসময় কবজিতে একটি রাবার ব্যান্ড পরতাম এবং যখনই আমি নেতিবাচক কিছু বলতাম বা নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আসত তখন সঙ্গে সঙ্গে রাবার ব্যান্ডে কামড় দিতাম। এটি একটি ছোট মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা। যদিও এটি আমাকে ইতিবাচক চিন্তা সম্পর্কে নতুন অভ্যাস তৈরিতে সাহায্য করেছে।’ ইতিবাচক চিন্তা করুন। এটি আপনাকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার