নিজস্ব সংবাদাতা, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ছাত্রদল ক্যাডার রিয়াজুল ইসলাম লিপটন নিখোঁজের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে শহরের কবিরপুর এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এক ক্লিনিক ব্যবসায়ী। সে লিপটনের পরিবারকে ফুসলিয়ে এ মামলায় পূর্ব শত্রুদের নাম অন্তর্ভূক্ত করতে দৌড়ঝাপ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ওই ক্লিনিক ব্যবসায়ীর সাথে একাধিক ব্যক্তির বিভিন্ন মামলা চলমান রয়েছে। প্রতিপক্ষদের ফাঁসাতে লিপটন নিখোঁজ মামলায় তাদের নাম জড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ৪ জানুয়ারী রিয়াজুল ইসলাম লিপটনের পিতা হাবিবপুর গ্রামের আব্দুল খালেক বাদী হয়ে এ ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করে। মামলায় কাজীপাড়া গ্রামের শারমিন আক্তার তানিয়া নামের এক শিক্ষিকাকে আসামী করা হয়। পরে পিবিআই’র উপর এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পড়ে। বাদীর অভিযোগ তার ছেলেকে বিবাদীর ইটভাটায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি পিবিআই তদন্তে সিডিআই ও এসএমএস এর মাধ্যমে মোবাইল কল লিস্টের সহযোগিতায় তদন্তের বিষয়টি পরিস্কার হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ৪ জানুয়ারী রাতে লিপটনকে যদি ভাটার আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় তাহলে পরদিন ৫ জানুয়ারি লিপটন তার (০১৭১১১০০৫৯৪) মোবাইল থেকে ড্রাইভার রিপন বিশ্বাসের সাথে (০১৭২১০৩১২১২) কথা বলে কিভাবে? ধুম্রজাল এড়াতে পিবিআই সংশি¬ষ্ট বিষয়ে একটি জিআর মামলা করার জন্য আদালতে মতামত দিয়েছে। ওই ক্লিনিক ব্যবসায়ী এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মামলার বাদীকে ভুলভাল বুঝিয়ে বশে আনে। বাদী আব্দুল খালেক শারমিন আক্তারসহ মোট ৯ জনকে আসামী করার আবেদন করেছে আদালতে। যাদের প্রত্যেকের সাথে ওই ক্লিনিক ব্যবসায়ীর বহু পূর্ব থেকেই শত্রুতা চলমান রয়েছে। মজার বেপার হলো এ মামলায় আসামীর তালিকায় ক্লিনিক ব্যবসায়ীর পূর্ব শত্রুদের নাম কেন? এ নিয়ে সুধী মহলে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। আসামীদের মধ্যে একজন দায়িত্বশীল সাংবাদিক, ২ জন ছাত্রলীগ কর্মী, ওই ক্লিনিক ব্যবাসায়ীদের চাচাতো ভাই যাদের সাথে জমাজমির বিরোধ রয়েছে এবং শারমিন আক্তারের কয়েকজন কর্মচারীর নাম রয়েছে। ঘটনা যাই হোক লিপটন নিখোঁজ মামলায় আসামী করার আবেদিত ৯ জনের সাথেই রয়েছে শৈলকুপার ওই ক্লিনিক ব্যবসায়ীর দীর্ঘদিনের শত্রুতা। অবস্থাদৃষ্টে শৈলকুপাবাসী মনে করে, প্রকৃত সত্য আড়াল করতেই জনৈক ক্লিনিক ব্যবসায়ী মরিয়া হয়ে মামলার বাদী আব্দুল খালেককে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত রয়েছে। লিপটন নিখোঁজের পর থেকেই নিয়মিত বাদী পক্ষের আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে ওই ক্লিনিক ব্যবসায়ীর বৈঠক, তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার আচরণদৃষ্টে তেমনটাই মনে করছে সচেতন মহল। শৈলকুপা থানায় বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী রিয়াজুল ইসলাম লিপটন নিখোঁজের পর জেলার দায়িত্বশীল সাংবাদিকগণ গুরুত্বের সাথে ফলাও করে পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশ করে। সন্তানহারা পরিবারকে পুজি করে ব্যক্তিস্বার্থে সক্রিয় শৈলকুপার ওই ক্লিনিক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে বিপুল বিত্তবৈভব আর একাধিক ক্লিনিক-ডায়াগনষ্টিকের মালিক বর্তমানে টাকার দাপটে ধরাকে সরাজ্ঞান করে রামরাজত্ব কায়েম করছে। তার ক্লিনিকের অবৈধ কাগজপত্রের বিরুদ্ধে বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশ করায় শৈলকুপা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইনকিলাবের দায়িত্বশীল সাংবাদিক শিহাব মলি¬কের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করায় সাংবাদিকদের সাথেও বিরোধ রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃক্ষের নিকট শৈলকুপার মানুষ লিপটন নিখোঁজের সঠিক রহস্য জানতে চায়। একটি স্পর্শকাতর মামলা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করতে কেউ মরিয়াভাবে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে মাঠে নামলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।